বেনাপোলে ভারতমুখী যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে

বেনাপোল
বেনাপোল

ঈদকে কেন্দ্র করে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে মানুষের ভারতে যাওয়া-আসা বেড়েছে। সপ্তাহখানেক ধরে বেনাপোল তল্লাশিচৌকি (চেকপোস্ট) দিয়ে প্রতিদিন সাড়ে ছয় থেকে সাত হাজার মানুষ পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারতে আসা-যাওয়া করছেন; যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দেড় থেকে দুই হাজারের মতো বেশি। চেকপোস্টের কর্মকর্তাদের ধারণা, ঈদের এক দিন পর থেকে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে দ্বিগুণ।

ঈদের ছুটিতে ভারতে গিয়ে কেনাকাটা ও বেড়ানোর জন্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ প্রতিদিন ভোর থেকে বেনাপোল সীমান্তে ভিড় করছেন।

অভিবাসন পুলিশের বেনাপোল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পাসপোর্টের মাধ্যমে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গমনাগমন যাত্রীর সংখ্যা গত এক সপ্তাহ ধরে বেড়েছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার সাত হাজার, শনিবার ৬ হাজার ৪০০ ও রোববার সাড়ে ছয় হাজার যাত্রী পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারতে যাতায়াত করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিবাসন পুলিশ বেনাপোলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মিয়া বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ভারতে আসা-যাওয়া যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। ঈদের পরদিন থেকে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে। ভারতের যাওয়া যাত্রীদের মধ্যে রয়েছে ৩০ শতাংশ চিকিৎসা ও ৭০ শতাংশ ঈদের কেনাকাটা ও বেড়ানোর যাত্রী। ফেরার সময়ে প্রত্যেক ঈদের কেনাকাটা সেরে ফিরছেন। অনেকে ঈদ ভারতে করার উদ্দেশ্যেও যাচ্ছেন।’

ঈদে ভারতমুখী যাত্রীদের সেবায় যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য অভিবাসন পুলিশের ডেস্ক একটানা কাজ করে যাচ্ছে বলেও ওসি জানান।

যশোর শহরের কাজীপাড়া এলাকার মুন্নী আকতার দম্পতি এবারের ঈদের কেনাকাটা করেছেন কোলকাতায়। কেনাকাটার পাশাপশি তাঁরা ভারতের দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করে সম্প্রতি দেশে ফিরলেন।
মুন্নী আকতার গতকাল রোববার বলেন, ‘কোলকাতার গোড়িয়াহাট থেকে এবারের ঈদের কেনাকাটা করেছি। সেখানে জিনিসপত্রের দাম কম শুনেই গিয়েছিলাম। সেখান থেকে মা, ভাইবোনসহ পরিবারের অন্যদের জন্য কেনাকাটা করেছি। সঙ্গে ভিকটোরিয়া মেমোরিয়ালসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে বেড়ানোও হয়েছে।’

ঢাকা থেকে বেনাপোল সীমান্তে আসা পাসপোর্টের যাত্রী মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘ঈদের আনন্দটা একটু অন্য রকম। এবার ঈদে একটু আগে থেকে ছুটি পাওয়া গেছে। যে কারণে ভারতে এবার ঈদ করব। সেখানে আত্মীয়স্বজন রয়েছে। তাদের সঙ্গেই হবে এবারের ঈদ। কেনাকাটাও সেখান থেকে সেরে নিব।’

ভারতগামী যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় যশোরের বাজারে ঈদের বেচাবিক্রি কমেছে। ১৫ রমজান পর্যন্ত যশোরের ঈদের বাজারে কেনাকাটা তেমন ছিলো না। তবে ঈদের আগমুহূর্তে কেনাকাটা কিছুটা জমেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যশোর শহরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কের তৈরি পোশাকের দোকান জ্যানথিকের স্বত্বাধিকারী মো. আবু সাঈদ চঞ্চল বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশের মানুষের ভারতে অবাদ যাতায়াত বেড়েছে। বিশেষ করে ঈদের আগে-পরে। তাঁরা ভারত থেকে ফেরার সময়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জিনিসপত্র কিনে নিয়ে আসেন। এতে আমাদের দেশের ঈদের কেনাকাটায় ধস নামছে। গত বছরের তুলনায় এবার ৩০ শতাংশ কম কেনাবেচা হয়েছে। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ ভারতমুখী বেশি। যে কারণে যশোরে বেচাবিক্রি কম। এ থেকে উত্তরণের পথও সহসা দেখছিও না।’