আশ্বাসে আশ্বাসে বছর যায়

>
  • করপোরেট কর কমানোর দাবি সবার
  • কয়েক বছর ধরে ছাড় দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছে সরকার
  • শেষ পর্যন্ত পাচ্ছে প্রভাবশালীরা

করপোরেট কর নিয়ে কয়েক বছর ধরে শুধু আশ্বাস পাচ্ছেন দেশের বিনিয়োগকারীরা। বাজেটের আগে তাঁদের করপোরেট কর কমানোর কথা বলা হয়। কিন্তু বাজেটে দেখা যায়, করপোরেট কর আর কমেনি।

করপোরেট কর কমানোর জোরদার আশ্বাসটি এসেছিল ২০১৭ সালের ১৯ মার্চ। ওই দিন দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) এক আলোচনা সভায় তখনকার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, করপোরেট কর কমানোর বিষয়টি যৌক্তিক। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এরপর মুহিত ওই বছর ১ জুন যে বাজেট প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তাতে করপোরেট করহার পুরোপুরি আগের মতো রাখা হয়। শুধু ছাড় দেওয়া হয় রপ্তানিমুখী পোশাক খাতে, এ খাতের করপোরেট করহার ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। পরের বাজেটে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট করহার আড়াই শতাংশ কমানো হয়।

দেশে সাধারণভাবে কোম্পানিগুলোর করপোরেট করহার ৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ, কোনো কোম্পানি ১০০ টাকা মুনাফা করলে তাকে ৩৫ টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে করপোরেট করের হার এর চেয়ে বেশি। যেমন তামাক কোম্পানি ও মোবাইল অপারেটরদের ওপর করপোরেট করের হার ৪৫ শতাংশ। ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করহার সাড়ে ৩৭ থেকে ৪০ শতাংশ। অবশ্য কোম্পানিটি যদি পুঁজিবাজারের নিবন্ধিত হয়, সে ক্ষেত্রে করহার ২৫ শতাংশ। অবশ্য দেশে পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা ৩১৬ টি।

সাধারণভাবে নির্ধারিত হারের বাইরে অনেক খাতকে সরকার বড় ধরনের ছাড় দেয়। এমনকি বছরের মাঝখানেও দু–একটি খাত বিশেষ ছাড় পায়। যেমন গত বছর সেপ্টেম্বরে পোশাক খাতে করপোরেট কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ করা হয়। পরিবেশবান্ধব কারখানার ক্ষেত্রে এ হার নির্ধারণ করা হয় ১০ শতাংশ। বিজিএমইএর নেতারা চান, ১২ শতাংশ থেকে আরও কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হোক।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) জমা দেওয়া বাজেট প্রস্তাব ও খাতসংশ্লিষ্ট সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, পোলট্রি, মাছ চাষ, বস্ত্র খাত ও টেরিটাওয়েলসহ কয়েকটি খাতে করের হার ১৫ শতাংশের মধ্যে। চামড়া খাতের সংগঠন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে করপোরেট করহার ৩৫ শতাংশই। তবে রপ্তানি করলে অর্ধেক রেয়াত পাওয়া যায়। তাতে করের হার দাঁড়ায় সাড়ে ১৭ শতাংশে।