সাত ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে খেলাপি ঋণ বাড়াতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও বেসরকারি খাতের সাতটি ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও বেসরকারি খাতের ইসলামী, আল-আরাফাহ্‌ ও ন্যাশনাল ব্যাংক। এদের মধ্যে আবার সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ বেড়েছে জনতা ও ইসলামী ব্যাংকের। খেলাপি ঋণসংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের মার্চভিত্তিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে চার হাজার কোটি টাকার বেশি। আর এ সময়ে ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দ্বিগুণের বেশি বেড়ে হয়েছে ৬ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিতে আরও যেসব ব্যাংকের ভূমিকা ছিল, তার মধ্যে রয়েছে মার্কেন্টাইল, ওয়ান, শাহ্‌জালাল, স্ট্যান্ডার্ড, সাউথইস্ট, মেঘনা, মধুমতি ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি–মার্চ সময়কালে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা। ফলে মার্চ শেষে সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। এতে করে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অবলোপনের হিসাব বাদে খেলাপি ঋণ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর আগে অবলোপনসহ খেলাপি ঋণ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছিল। আর এখন অবলোপনসহ খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা।

ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ায় গত মঙ্গলবার জরুরি সভা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। খেলাপি ঋণ বেশি বেড়ে যাওয়ায় রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও বেসরকারি খাতের আল-আরাফাহ্‌, ইসলামী, ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের ওই সভায় ডাকা হয়। সভা থেকে এই সাত ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার নির্দেশ দেন গভর্নর ফজলে কবির। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে ও খেলাপি কমাতে একটি কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়েকটি ব্যাংকের এমডির কাছে খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমাতে বলা হয়েছে। আমরা নিজেরাও এ জন্য একটি কমিটি গঠন করেছি।’

ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডিসেম্বরে যেসব ঋণ পুনঃ তফসিল করা হয়েছিল, তা আবার খেলাপি হয়ে পড়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে আমরা বৃহস্পতিবার জরুরি সভা ডেকেছি।’