করদাতার সংখ্যা শিগগির এক কোটিতে নেওয়া হবে: অর্থমন্ত্রী

জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ঢাকা, ১৩ জুন। ছবি: পিআইডি
জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ঢাকা, ১৩ জুন। ছবি: পিআইডি

চার কোটি নাগরিক মধ্যম আয়ের অন্তর্ভুক্ত হলেও দেশে আয়কর দেন ২১ লাখ থেকে ২২ লাখ নাগরিক। এই সংখ্যা খুব শিগগিরই এক কোটিতে নিয়ে যাওয়া হবে। লিখিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার এই অঙ্গীকার করেছেন।

অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দীর্ঘকাল থেকে অভিযোগ আছে যাঁরা কর দেন, তাঁরাই প্রতিবছর সরকারকে কর দিয়ে থাকেন। অন্যদের কর দেওয়ার মতো শক্তিশালী অবস্থান থাকলেও তাঁরা দিচ্ছেন না। কর দেওয়ার যোগ্য সব ব্যক্তিকে করের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

করদাতার ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার বিপক্ষে সরকার—এই কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘কর আদায়ে আমাদের নীতি হবে অনেকটা ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুইয়ের অর্থমন্ত্রী জ্যঁ ব্যাপটিস্ট কোলবার্টের একটা উক্তি অনুসরণ করে। “রাজহাঁস থেকে পালক ওঠাও যতটা সম্ভব ততটা, তবে সাবধান রাজহাঁসটি যেন কোনোভাবেই ব্যথা না পায়।”’

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট বক্তৃতায় বলেন, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা হবে, তবে সেটা করহার বাড়িয়ে নয়; বরং সেটা করা হবে করের আওতা বাড়িয়ে। এই কাজ করার জন্য দেশের সব উপজেলা, প্রয়োজনে গ্রোথ সেন্টারগুলোয় প্রয়োজনীয় জনবল, সহায়ক অবকাঠামোসহ রাজস্ব কার্যালয় স্থাপন করা হবে।

করহার পূর্ণমাত্রায় ব্যবসাবান্ধব করা হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কর রাজস্ব আহরণ কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারব, যখন কর রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় সব ধরনের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও অপচয় রোধ করতে পারব। রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে শতভাগ অটোমেশনের আওতায় আনা হবে। বন্ডেড ওয়্যারহাউস ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা বলবৎ রাখা হবে। বন্ধ করা হবে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে মালামাল খালাস।’

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট বক্তৃতায় বলেন, যত পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি হয়ে আসে আর বিদেশে যেসব পণ্য রপ্তানি করা হয়, তা শতভাগ স্ক্যানার মেশিনের মাধ্যমে স্ক্যানিং করা হবে। আমদানির বিপরীতে ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিং হয় কি না, তা–ও শতভাগ পরীক্ষা করে দেখা হবে। এ জন্য বিশেষায়িত ইউনিট খোলা হবে। রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মদক্ষতা বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে দেশবাসীকে অবহিত করাটা প্রয়োজন মনে করছি যে আমরা ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটটিতে দেশের জনগণের নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে, তেমন কোনো উপকরণ অন্তর্ভুক্ত করিনি।’

ভ্যাট আইন কার্যকর করা নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সব কর আইন স্বচ্ছতার সঙ্গে সহজভাবে তৈরি করে তা সবার কাছে সহজবোধ্যভাবে উপস্থাপন করা হবে। দেশের নাগরিকেরা সরকারকে রাজস্ব দিতে রাজি আছেন, কিন্তু নানা কারণে রাজস্ব আহরণে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। এবার এই দিকটায় বিশেষ নজর দেওয়া হবে।’