ধনীদের সারচার্জে আবারও ছাড়

ধনীদের জন্য বাজেটে আবারও ছাড় দিলেন অর্থমন্ত্রী। এখন থেকে তিন কোটি টাকার কম বাড়ি-গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের সম্পদ থাকলে সারচার্জ দিতে হবে না। এত দিন সোয়া দুই কোটি টাকার সম্পদ থাকলেই সারচার্জ দিতে হতো। বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী সারচার্জে নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন।

করব্যবস্থায় প্রগতিশীলতা আনতে সারচার্জ আরোপ করা হয়। যাঁরা যত বেশি ধনী, তাঁদের বেশি কর দিতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, সারচার্জ সম্পদের পরিমাণের ওপর বসবে না। ওই করদাতা যত কর দেবেন, ওই করের ওপর সারচার্জ বসবে। যেমন ৩ থেকে ৫ কোটি টাকার সম্পদধারী কোনো করদাতার করের পরিমাণ যদি ১ লাখ টাকা হয়, ওই ব্যক্তির সারচার্জ হবে ১০ হাজার টাকা।

সারচার্জের নতুন কাঠামো অনুযায়ী, তিন কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত সম্পদ থাকলে ওই করদাতা যত আয়কর দেবেন, ওই আয়করের ১০ শতাংশ সারচার্জ দিতে হবে। তবে একাধিক প্রাইভেট কার, জিপ ও মাইক্রোবাস থাকলেও এই সারচার্জ দিতে হবে। এ ছাড়া কারও সম্পদ যদি ৫ থেকে ১০ কোটি টাকার মধ্যে হয়, তাহলে আয়করের ১৫ শতাংশ সারচার্জ দিতে হবে। তবে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত সম্পদের মালিকের আয় না থাকলেও ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা সারচার্জ দিতেই হবে।

  • তিন কোটি টাকা পর্যন্ত সম্পদ থাকলে সারচার্জ দিতে হবে না
  • ন্যূনতম সারচার্জ তিন হাজার টাকা

কোনো করদাতার নিট সম্পদের পরিমাণ ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা হলে আয়ের ২০ শতাংশ; ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা হলে ২৫ শতাংশ এবং ২০ কোটি টাকার বেশি হলে আয়ের ৩০ শতাংশ সারচার্জ দিতে হবে। তবে ১০ থেকে ৩০ কোটি টাকার মধ্যে সম্পদ থাকলে আয় না থাকলেও কমপক্ষে ৫ হাজার টাকা সারচার্জ দিতেই হবে।

এবার অতি ধনীদের ক্ষেত্রে নতুন করে শর্ত আরোপ করেছেন অর্থমন্ত্রী। শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, কোনো করদাতার নিট সম্পদের পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা বা এর বেশি হলে ওই ব্যক্তির সারচার্জ ভিন্নভাবে আরোপ হবে। ওই ব্যক্তির যত সম্পদ আছে, তার দশমিক ১ শতাংশ কিংবা ওই ব্যক্তি যত আয়কর দেবেন, তার ওপর ৩০ শতাংশ সারচার্জের পরিমাণ এর মধ্যে যেটি বেশি হবে, সেই সারচার্জ প্রযোজ্য হবে। উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে, কোনো ব্যক্তির যদি ১০০ কোটি টাকার সম্পদ থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তির কোনো আয় না থাকলেও ১০ লাখ টাকা সারচার্জ দিতে হবে।

করদাতার বার্ষিক আয়কর জমার সময় পরিসম্পদ, দায় ও খরচের বিবরণীতে নিট সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করতে হয়। সেই সম্পদের ওপরেই সারচার্জ আরোপ করা হয়। তবে ধনীদের অনেকেই নিজেদের সম্পদ কর বিবরণীতে ঘোষণা দেন না। অনেকে কালোটাকার সম্পদ দেখান না।