বাজেট জনমুখী ও ব্যবসা-সহায়ক: এফবিসিসিআই

বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। মতিঝিল, ঢাকা, ১৫ জুলাই। ছবি: শুভংকর কর্মকার
বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। মতিঝিল, ঢাকা, ১৫ জুলাই। ছবি: শুভংকর কর্মকার

২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে জনমুখী ও ব্যবসা–সহায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। তারা বলছে, এ বাজেট ব্যবসাবান্ধব এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।

রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে আজ শনিবার আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে সংবাদ সম্মেলন করে এফবিসিসিআই। এতে মূল বক্তব্য পাঠ করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম।

বিনা প্রশ্নে ফ্ল্যাট, জমি ও শিল্পে কালোটাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ করার সুযোগ দেওয়াকে স্বাগত জানান শেখ ফজলে ফাহিম। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগকে আমরা স্বাগত জানাই। বৈধভাবে উপার্জিত অর্থ কোনো কারণে অপ্রদর্শিত থাকতে পারে। সেই অর্থ উৎপাদন খাতে গেলে সেটিকে আমরা নেতিবাচক বলে মনে করি না। তা ছাড়া অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ হলে অর্থপাচারও বন্ধ হবে।’

চলতি অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক খাত থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এটি হলে বেসরকারি খাত বাধাপ্রাপ্ত হয় উল্লেখ করে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বৈদেশিক উৎস, অবকাঠামো তহবিল, অবকাঠামো বন্ড ও অন্যান্য আর্থিক উপাদানের ওপর জোর দেওয়ার অনুরোধ করেন।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড–নিয়ন্ত্রিত রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি। হয়রানিমুক্ত রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনা ও সঠিক অটোমেশনের মাধ্যমে রাজস্ব আয়ের এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বড় ব্যবসার ক্ষেত্রে কোনো হয়রানি থাকবে না। ভোক্তাপর্যায়ে খরচ বৃদ্ধি পাবে না। ব্যবসা সহজীকরণের কোনো বাধা থাকবে না। ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত হবে এবং করের আওতা বৃদ্ধি পাবে।’ সুষ্ঠু তদারকিব্যবস্থা জোরদার করলে প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক ব্যক্তি, বিধবা ও স্বামী–নিগৃহীতা নারী, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী, চা–শ্রমিকসহ সব উপকারভোগীর সংখ্যা ও আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি করা মানবিক পদক্ষেপ। এ ছাড়া যুবকদের জন্য ব্যবসা উদ্যোগ সৃষ্টির জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, নিজাম উদ্দিন আহমেদ, হাসিনা নেওয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।