বছরে উৎপাদন করা হবে ১০ লাখ মোটরসাইকেল

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শিল্পোন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশে ২০২৭ সাল নাগাদ মোটরসাইকেলের বার্ষিক উৎপাদনক্ষমতা ১০ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সময়ের মধ্যে এ শিল্প খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের পরিমাণ ১৫ লাখে উন্নীত করা হবে। এসব লক্ষ্য অর্জনে শিল্প মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট শিল্প-উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও নীতিসহায়তা দেবে।

আজ রোববার মোটরসাইকেল ‘শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৮’ বাস্তবায়নের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের গঠিত সমন্বয় পরিষদের সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

সভাপতির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, শিল্পোন্নত বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান সরকার মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী শিল্পকে সব ধরনের সহায়তা দেবে। এ শিল্পে উৎপাদিত যন্ত্রাংশের গুণগতমান নিয়ন্ত্রণে উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বিএসটিআই ও বিটাক। এ সময় নতুন কারখানা স্থাপনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও রিসাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উদ্যোক্তাদের নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, জনকল্যাণে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির প্রয়োজন হলেও অযৌক্তিক রেজিস্ট্রেশন ব্যয় বাড়িয়ে জনগণকে কষ্ট দেওয়া সরকারের লক্ষ্য নয়।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, দেশীয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় আমদানি করা পণ্যে অধিক হারে কর আরোপের পাশাপাশি দেশীয় উৎপাদকদের কর রেয়াতের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যদিকে, মোটরসাইকেল নিবন্ধন খাতে কর ফাঁকি বন্ধ করতে বিক্রি হওয়া মোটরসাইকেলের তালিকা স্থানীয় জেলা প্রশাসক, বিআরটিএ ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানোর জন্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেন প্রতিমন্ত্রী।

মোটরসাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা বাস্তবায়নের কৌশল নিয়ে সভায় আলোচনা হয়। এ সময় দেশীয় মোটরসাইকেল শিল্পের বনিয়াদ শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ভেন্ডর উন্নয়ন, অটোমোবাইল খাতের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, মোটরসাইকেল পশ্চাৎ-সংযোগ শিল্প পার্ক ও বাংলাদেশ অটোমোটিভ ইনস্টিটিউট স্থাপন, মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানো ও ব্যবস্থাপনা যুগোপযোগী করাসহ অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।

সভায় মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী শিল্প-উদ্যোক্তারা এ শিল্প বিকাশের পেছনে প্রতিবন্ধকতা ও সমস্যা তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, ইতিমধ্যে মোটরসাইকেল শিল্প খাতে উদ্যোক্তারা প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। মোটরসাইকেলের আমদানি করা যন্ত্রাংশের শুল্ক হার তুলনামূলক কম হওয়ায় দেশীয় খুচরা যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী ভেন্ডররা কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছেন। এ ছাড়া পণ্যের গুণগতমান যাচাইয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগের সীমাবদ্ধতা, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অধিক রেজিস্ট্রেশন ব্যয়, ঘন ঘন এসআরও জারি ও শুল্ক নীতির পরিবর্তন, সিকেডি ও সিবিইউ মোটরসাইকেল আমদানিতে ক্রমান্বয়ে শুল্ক ব্যবধান হ্রাস পাওয়ায় উদীয়মান এ শিল্পের বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে বলেও তারা মন্তব্য করেন।

সভায় শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম, শিল্প মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিডা, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিআরটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিএসটিআই, বিটাক, বিএসইসি ও বিসিকের প্রধান, বাংলাদেশ মোটরসাইকেল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।