বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট ৪ জুলাই, যেভাবে পণ্য বহন করা যাবে

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ফাইল ছবি
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ফাইল ছবি

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চলতি মৌসুমের প্রথম হজ ফ্লাইট আগামী ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাবে। ওই দিন সকাল সোয়া সাতটায় ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে বিমানের বিজি-৩০০১ ফ্লাইটটি ঢাকা ছাড়বে।

বাংলাদেশ থেকে এ বছর প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। তাঁদের মধ্যে বিমানের ফ্লাইটে যাবেন ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন। প্রত্যেক হজযাত্রী ৪৬ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন বলে জানিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।

আজ মঙ্গলবার বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার জানান, প্রত্যেক হজযাত্রী বিনা মূল্যে সর্বাধিক দুটি ব্যাগেজে ২৩ কেজি করে মোট ৪৬ কেজি মালামাল বিমানে এবং কেবিন ব্যাগেজে ৭ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। কোনো অবস্থাতেই প্রতিটি ব্যাগেজের ওজন ২৩ কেজির বেশি হবে না। প্রত্যেক হাজীর জন্য ৫ লিটার জমজমের পানি দেশে আসার পর তাঁদের কাছে দিয়ে দেওয়া হবে। কোনো অবস্থাতেই হাজিরা সঙ্গে করে বিমানে পানি বহন করতে পারবেন না।

ধারালো বস্তু ব্যাগেজে নেওয়া যাবে না উল্লেখ তাহেরা খন্দকার জানান, যেকোনো ধারালো বস্তু যেমন—ছুরি, কাঁচি, নেইল কাটার, ধাতব নির্মিত দাঁত খিলন, কান পরিষ্কারক, তাবিজ ও গ্যাস জাতীয় বস্তু যেমন অ্যারোসল এবং ১০০ (এম এল)-এর বেশি তরল পদার্থ হ্যান্ড ব্যাগেজে বহন করা যাবে না। এ ছাড়া কোনো প্রকার খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে নেওয়া যাবে না। লাগেজ স্যুটকেস অথবা ট্রলিব্যাগ হতে হবে। কোনো অবস্থায় গোলাকৃতি, দড়িবাঁধা ব্যাগ ইত্যাদি বিভিন্ন আকৃতির ব্যাগেজ গ্রহণযোগ্য হবে না।

প্রথমবারের মতো এ বছর কিছু ফ্লাইটের জেদ্দা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম ঢাকা থেকেই সম্পন্ন করা হবে। এ জন্য সৌদি আরবের একটি ইমিগ্রেশন টিম ঢাকায় অবস্থান করবে। এ বছর বিমান হজযাত্রীদের উড়োজাহাজের সামনের অপেক্ষাকৃত বড় ও আরামদায়ক নিশ্চিত আসন নেওয়ার ক্ষেত্রে ওয়ানওয়েতে ১০০ ডলার বা সমপরিমাণ টাকা এবং যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে ২০০ ডলার বা সমপরিমাণ টাকা দিতে হবে। এ ছাড়া হজযাত্রীদের টিকিট কেনার পর যাত্রার তারিখ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যাত্রার ২৪ ঘণ্টা আগে ২০০ মার্কিন ডলার এবং যাত্রার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রা পরিবর্তনের জন্য ৩০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বাড়তি মাশুল আদায়ের বিধান রাখা হয়েছে। নির্ধারিত ফ্লাইটে না গেলে টিকিটের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না। বিমান কর্তৃক পরিচালিত ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটগুলোর চেক-ইন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা প্রতিবারের মতো এবারও হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজক্যাম্পেই সম্পন্ন করা হবে। এ বছর সৌদি সরকার নির্ধারিত বরাদ্দকৃত স্লটের বাইরে অতিরিক্ত কোনো ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেবে না বলে জানিয়েছে।

বিমানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ বছর বিমানের ফ্লাইটে ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন হজযাত্রী যাবেন। তাঁদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৭ হাজার ১৯৮ জন ব্যালটি হজযাত্রী এবং বাকি ৫৬ হাজার ৪০১ জন নন-ব্যালটি হজযাত্রী, যাঁরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। বিমানের চারটি নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর উড়োজাহাজে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত শিডিউল ফ্লাইটেও হজযাত্রীরা জেদ্দায় যাবেন। ঢাকা থেকে জেদ্দা প্রতি ফ্লাইটের উড্ডয়নকাল হবে আনুমানিক সাত ঘণ্টা। দুই মাসব্যাপী হজফ্লাইট পরিচালনায় শিডিউল ফ্লাইটসহ মোট ৩৬৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে, এর মধ্যে ৩০৪টি ডেডিকেটেড এবং ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট। চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকে এ বছর যথাক্রমে ১৯টি ও ০৩টি হজ-ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।

৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত হজ–পূর্ব মোট ১৮৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে (ডেডিকেটেড-১৫৭ এবং শিডিউল ৩২)। হজ–পরবর্তী ১৪৭টি ফ্লাইট চলবে ১৭ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (ডেডিকেটেড-১৪৭ এবং শিডিউল ২৯)। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মদিনা ১৮টি ও মদিনা থেকে বাংলাদেশে ১৫টি সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।

এদিকে ৪ জুলাই উদ্বোধনী হজ ফ্লাইটের আগে বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ হজযাত্রীদের বিদায় জানাবেন।