সৈয়দপুর বিমানবন্দরের জন্য ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ

সৈয়দপুর বিমানবন্দর। ছবি: প্রথম আলো
সৈয়দপুর বিমানবন্দর। ছবি: প্রথম আলো

সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে অধিগ্রহণ চিহ্নিত এলাকায় ফিল্ড বুক তৈরির কাজ। শিগগিরই জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা ভূমি কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসন, বন বিভাগ ও সৈয়দপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সমন্বয় সভায় দু-এক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের মাঝে অর্থ দেওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হবে। অধিগ্রহণ চিহ্নিত জমির সার্বিক অবস্থা নিরূপণে ভূমি অধিদপ্তর ফিল্ড বুক তৈরির কাজ শেষ করেছে।  ১১ জুলাই এ কাজ শেষ হয়।

সূত্রটি জানায়, গত ৮ এপ্রিল সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীতকরণ প্রকল্প সীমানা চিহ্নিত ও জরিপ কাজ শুরু করে। নীলফামারী জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা (এলএ) ওই জরিপ কাজ সম্পন্ন করে। মাঠ পর্যায়ে ওই জরিপ কাজ তদারকি করেন নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহীনুর আলম। তাঁকে সহযোগিতা করেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম গোলাম কিবরিয়া ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম গোলাম কিবরিয়া বলেন, তিনটি সার্ভে দল অধিগ্রহণ চিহ্নিত এলাকায় ফিল্ড বুক তৈরির কাজ সম্পন্ন করেছে। এ ছাড়া সন্নিবেশিত এলাকায় ভূমিহীনদেরও নিবন্ধনের আওতায় আনা হয়। যাতে করে তাদেরও পুনর্বাসনের সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। ওপরের নির্দেশেই ওই কাজটি করা হয়েছে।

গোলাম কিবরিয়া জানান, সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নীতকরণ প্রকল্পের জন্য ৯১২ দশমিক ৯০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এসব জমির মধ্যে সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়ন ও দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডী ইউনিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে সৈয়দপুরের ৫৯৫ দশমিক ১৩ একর জমি যার মধ্যে সরকারি তিনটি সংস্থার ৬০ একর জমি রয়েছে। অপরদিকে পার্বতীপুরে রয়েছে ৩১৭ দশমিক ৭৭ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে সৈয়দপুর অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের জমির পরিমাণ ১৩৬ একর। এর সঙ্গে আরও যুক্ত হচ্ছে ৯১২ দশমিক ৯০ একর জমি। সব মিলে এক হাজার ৪৮ একর জমির ওপর গড়ে উঠবে বিমানবন্দর। এতে থাকবে ১২ হাজার ফুট রানওয়ে, নতুন বিমানবন্দর টার্মিনালসহ যাবতীয় অবকাঠামো।

সূত্রটি জানায়, বিমানবন্দর এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকার প্রাথমিকভাবে ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এ অর্থ সংগ্রহ হয়েছে ভারতীয় ঋণ ও দেশীয় তহবিল থেকে। আগামী ২০২০ সালের মধ্যে সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাজ সম্পন্ন হবে বলে সূত্রটি জানায়।

সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার জানান, ইতিমধ্যে সম্পন্ন হওয়া জরিপে জমির মালিকানা, স্থাপনার ধরন ও জমিতে বনজ সম্পদের তথ্য নিরূপণ করা হয়েছে। এসব বিবেচনায় রেখে ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ প্রদান করা হবে।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক সুশান্ত দত্ত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের দশম জাতীয় সংসদে সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। ভারত, ভুটান, নেপাল, চীনের মধ্যে পণ্য আনা নেওয়া পর্যটন ও বাণিজ্য বিকাশে বিমানবন্দরটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।