ডিএসইএক্স কমে ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে

সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসেই ব্যাপক দরপতন হয়েছে দেশের দুই শেয়ারবাজারে। আজ সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৭ পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে। গতকাল রোববার এ সূচক ৯৭ পয়েন্ট দর হারায়। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ২০০ পয়েন্ট।

আজ ডিএসইতে ডিএসইএক্স সূচক কমে নেমে এসেছে ৪ হাজার ৯৬৬ পয়েন্টে। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বরের পর এটিই ডিএসইএক্সের সর্বনিম্ন অবস্থান। আজ হাতবদল হওয়া শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬০টির, কমেছে ২৭৭টির, অপরিবর্তিত আছে ১৬টির দর।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, ১০ দিনের বেশি সময় ধরে শীর্ষ পর্যায়ের ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বাজারে শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি করছে বেশি। বাজারের সাম্প্রতিক এ দরপতনকে ‘অস্বাভাবিক’ মনে করছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি)। অস্বাভাবিক পতনের কারণ অনুসন্ধানে গতকাল রোববার চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিএসইসির পরিচালক রেজাউল করিমকে প্রধান করে গঠিত এ কমিটিকে বাজারের সাম্প্রতিক সময়ের অস্বাভাবিক পতন, লেনদেন কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের দিক থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তাতে বাজারে সুফল আসেনি। যদিও এগুলোর মধ্যে কিছু কিছু পদক্ষেপ দীর্ঘ মেয়াদে ভালো। বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, বাজারে যখন মন্দাভাব চলছে, তখন এ ধরনের পদক্ষেপে ইতিবাচক প্রভাবের চেয়ে নেতিবাচক প্রভাবই বেশি পড়েছে। যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তাদের ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই, সেসব কোম্পানি বোনাস লভ্যাংশ দিতে পারবে না বলে বিএসইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথমত, মন্দা বাজারে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এটি ছিল না। দ্বিতীয়ত, উদ্যোক্তাদের ব্যর্থতার শাস্তি এসে পড়বে শেয়ারধারীর ওপর।

বাজার–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আজ দিনের শুরুতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দিয়ে লেনদেন শুরু হলেও অল্প সময় পরেই দর কমতে থাকে। এ সময় ক্রেতাসংকট দেখা দেয়। সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও আতঙ্কিত হয়ে তাঁদের হাতে থাকা শেয়ার লোকসান দিয়ে বিক্রি করে দেন। আবার শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান জোরপূর্বক বিক্রি (ফোর্সড সেল) শুরু করে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে বাজারে প্রায় টানা দরপতন চলছে। ৩০ জুন বাজেট পাসের পর ১৫ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচকটি প্রায় ৪৬৭ পয়েন্ট কমে গেছে।

আজ লেনদেনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হলো ফরচুন, স্কয়ার ফার্মা, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, ফেডারেল ইনস্যুরেন্স, সি পার্ল, সিনো বাংলা, মুন্নু সিরামিকস, ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স, গ্রামীণফোন ও বিএটিবিসি।

অন্যদিকে, সিএসইতে হাতবদল হওয়া শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪৮টির, কমেছে ২১৬টির, অপরিবর্তিত আছে ২২টির দর।