শতকোটি টাকার ঋণ তদারকিকে বিশেষ সেল

১০০ কোটি টাকার বেশি খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোকে ‘বিশেষ তদারকি সেল’ গঠন করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিটি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হবেন এ সেলের প্রধান। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজ সোমবার এ নিয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

ব্যাংকগুলো অনেক আগে থেকে প্রতি প্রান্তিকে শীর্ষ ২০ খেলাপি গ্রাহকের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দেয়। এখন শত কোটি টাকার বেশি খেলাপির তথ্য দিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ তথ্য ব্যুরোর হিসাবে গত এপ্রিল পর্যন্ত ১০০ কোটি টাকা ও এর বেশি খেলাপি গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ১৭৭। তাদের ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর বড় অংশই রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে। আর ১৭৭ গ্রাহকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেলাপি গ্রাহক জনতা ব্যাংকে। এর মধ্যে দুটো গ্রুপের কাছেই পাওনা ১০ হাজার কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণ আদায় বাড়াতে ও খেলাপি ঋণগ্রহীতার সংখ্যা কমিয়ে আনতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বিশেষ তদারকি সেল। প্রতি ত্রৈমাসিকে খেলাপি ঋণ আদায়ের অগ্রগতিসহ যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে অবহিত করতে হবে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ওই বিবরণীর যথাযথ পর্যালোচনা নিশ্চিত করবে। এ ক্ষেত্রে এসব ঋণ আদায়ে ব্যাংক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ একটি নির্দিষ্ট সময়ের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নিয়মিতভাবে ওই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কার্যক্রম পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বিবরণী প্রস্তুতে নির্দিষ্ট কাঠামোও তৈরি করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে এ কাঠামো মেনে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে। নতুন এ কাঠামো অনুযায়ী একজন খেলাপি গ্রাহকের তথ্য জমা দিতে হবে ব্যাংকগুলোকে।

গত মার্চ শেষে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় ২০০৯ সালের শুরুতে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এর বাইরে আরও ৪০ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছ, যা অবলোপন করা হয়েছে।