গ্রাহককে অনেক সুবিধা দিতে হয়

>একমাত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ক্রেডিট কার্ড সেবা দিচ্ছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক এখন এক লাখের বেশি। ক্রেডিট কার্ড সেবা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা শাহরিয়ার
খাজা শাহরিয়ার, এমডি, লংকাবাংলা
খাজা শাহরিয়ার, এমডি, লংকাবাংলা

প্রথম আলো: ব্যাংকের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে লংকাবাংলারও ক্রেডিট কার্ড সেবা আছে। কেমন চলছে আপনাদের কার্ড ব্যবসা?
খাজা শাহরিয়ার: এখন ব্যাংকগুলো এ সেবা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করেছিল স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। এর পরপরই ১৯৯৮ সালে ভানিক বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড সেবা চালু করে। তখনকার ভানিকই এখন লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। ভানিক চলে যাওয়ার পর ২০০৩ সাল থেকে মাস্টারকার্ডের সঙ্গে যৌথ কার্ড চালু করে লংকাবাংলা। এখন পর্যন্ত লংকাবাংলাই একমাত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যার কার্ড সেবা আছে। ক্রেডিট কার্ডের বাজারে আমাদের প্রধান প্রতিযোগী ব্যাংক। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই আমাদের গ্রাহক ধরতে হচ্ছে। বাজারে গ্রাহক ও লেনদেন বিবেচনায় আমাদের অবস্থান এখন ৫ম।

প্রথম আলো: ব্যাংকগুলো ডলারেও কার্ড সেবা দিচ্ছে। আপনারা তা পারছেন না। আবার টাকা জমা দিতে আপনাদের কাউন্টার সেবাও নেই। এরপরও কীভাবে ৫ম অবস্থানে লংকাবাংলা?
খাজা শাহরিয়ার: ব্যাংকগুলো ডলারেও কার্ড সেবা দিতে পারছে, আমরা কিন্তু তা পারছি না। এভাবেই প্রথম থেকে চলে আসছে। এরপরও আমাদের কিছু সুবিধা আছে। অন্য ব্যাংকের কার্ডের টাকা শুধু নিজের ব্যাংকেই জমা দেওয়া যায়। আমাদের গ্রাহকেরা ঢাকা, এবি, মার্কেন্টাইল, ওয়ান ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের সব শাখার মাধ্যমে টাকা জমা দিতে পারে। আবার ইউক্যাশ, আইপে, শিওর ক্যাশ, ঢাকা ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপ ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের এটিএম বুথের মাধ্যমে লংকাবাংলার ক্রেডিট কার্ডের টাকা পরিশোধ করা যাচ্ছে। বাসায় বসেও এসব ব্যাংকের অনলাইন সুবিধা ব্যবহার করে টাকা জমা দেওয়া যাচ্ছে। এ জন্যই আমরা অনেক ব্যাংকের চেয়ে এগিয়ে।

প্রথম আলো: গ্রাহকদের বাড়তি কী সুবিধা দিচ্ছেন?

খাজা শাহরিয়ার: ক্রেডিট কার্ড ব্যবসা করতে হলে গ্রাহককে অনেক বেশি সুবিধা দিতে হয়। নতুন নতুন অফার দিতে হয়। আমরা মনে করি, লংকাবাংলা তা খুব ভালোভাবে করতে পেরেছে। এ জন্য এক হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি রয়েছে। লংকাবাংলাই প্রথম প্রতিষ্ঠান যারা মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তদের কাছে কার্ড পৌঁছে দিয়েছে। ২০ হাজার টাকা মাসিক বেতন হলেই লংকাবাংলার কার্ড দেওয়া হয়।

প্রথম আলো: দেশের কার্ডের বাজার কেমন বড় হচ্ছে? সেখানে লংকাবাংলার কার্ড সেবা কেমন বাড়ছে?

খাজা শাহরিয়ার: দেশে ক্রেডিট কার্ডের বাজার প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার। সেখানে আমাদের কার্ডে ঋণ ৪০০ কোটি টাকার বেশি। বাজারের প্রায় ৯ শতাংশ কার্ড আমাদের। দেশে কার্ডের ব্যবহার বছরে ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে, সেখানে আমাদের প্রবৃদ্ধি ২২ শতাংশ। গত ৫ বছরে কার্ডের গ্রাহক ৯৯ শতাংশ হারে বেড়েছে, সেখানে আমাদের বেড়েছে ২৮৪ শতাংশ হারে। গত ১০ বছরে বাংলাদেশে বড় পরিবর্তন ঘটেছে। ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ভোক্তা তৈরি হয়েছে। এ জন্য কার্ড সেবার প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, আরও হবে।

প্রথম আলো: ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকের বড় অংশই রাজধানীকেন্দ্রিক। এর কারণ কি সুদহার না অন্য কিছু?

খাজা শাহরিয়ার: সারা বিশ্বেই ক্রেডিট কার্ডে সুদহার বেশি। ভারতেও অনেক বেশি। কারণ, এ ঋণে কোনো জামানত নেই। আবার এ সেবা দিতে খরচও খুব বেশি। করপোরেট ঋণ দিতে আমাদের কোনো প্রচার করতে হয় না, কিন্তু ক্রেডিট কার্ডে নিয়মিত ভিত্তিতে প্রচার চালাতে হয়।