টানা পতনে কমেছে লেনদেনও

শেয়ারবাজার
শেয়ারবাজার

দেশের শেয়ারবাজারে আবারও টানা দরপতন শুরু হয়েছে। এ নিয়ে টানা তিন দিন বাজারে দরপতন ঘটেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল রোববার দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক ও লেনদেন কমে গেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ২৫ পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে ৫ হাজার ৭১ পয়েন্টে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটি কমেছে ৮০ পয়েন্ট।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, টানা দরপতনের কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারও আতঙ্ক ভর করেছে। তবে এ দরপতনের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ বলতে পারছেন না কেউই। তাঁরা বলছেন, কিছুদিন পরপর বাজার টানা পতনের ধারায় চলে যাচ্ছে। এতে করে বাজারে নতুন করে বিনিয়োগ আসছে না। গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর থেকে বাজারে কয়েক দফায় সূচকের বড় ধরনের উত্থান-পতন ঘটেছে। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম আস্থাহীনতা বিরাজ করছে। এ কারণে লেনদেনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ঢাকার বাজারে গতকাল দিন শেষে লেনদেন নেমে এসেছে ৩৩২ কোটি টাকায়। ২৩ জুলাইয়ের পর এটিই ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন।

ঢাকার বাজারের প্রধান সূচকটি গত তিন কার্যদিবসেই কমেছে ১০৮ পয়েন্ট। তাতে সূচকটি গত প্রায় দেড় মাসের মধ্যে আবারও সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। সর্বশেষ গত ২২ জুলাই ডিএসইএক্স সূচকটি ৪ হাজার ৯৬৬ পয়েন্টের সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল। গতকাল তা আরও কমে ৫ হাজারের কাছাকাছি চলে এসেছে। এর আগে গত জুলাইয়ে ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার পয়েন্টের মনস্তাত্ত্বিক সীমার নিচে নেমে আসে। এরপর দরপতনের কারণ খুঁজতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি এরই মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিয়েছে।

মার্চেন্ট ব্যাংক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকালের বাজারে সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে তিনটি কোম্পানি। এগুলো হলো স্কয়ার ফার্মা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ইস্টার্ণ ব্যাংক। এ ছাড়া সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল খাতভিত্তিক দরপতনে শীর্ষে ছিল জীবনবিমা খাতের কোম্পানি। এ খাতের লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম এদিন গড়ে ১ দশমিক ৭ শতাংশ করে কমেছে। এর বাইরে কমেছে সাধারণ বিমা, সিমেন্ট, প্রকৌশল, টেলিযোগাযোগ, ব্যাংক খাতের শেয়ারের দামও। সাধারণ বিমা খাতের লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম এদিন গড়ে ১ দশমিক ৬ শতাংশ, সিমেন্ট খাতের কোম্পানির দাম ১ দশমিক ১ শতাংশ, প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলোর দাম ১ শতাংশ, টেলিযোগাযোগ খাতের লেনদেন হওয়া কোম্পানির শেয়ারের দাম শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ এবং ব্যাংক খাতের লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম গড়ে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ করে কমেছে।

ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৫১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬০ শতাংশ বা ২১০টিরই দাম কমেছে, বেড়েছে কেবল ২৬ শতাংশ বা ৯৩টির দাম। ডিএসইতে এদিন মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল মাঝারি মৌলভিত্তির ‘বি’ শ্রেণিভুক্ত কোম্পানি কেঅ্যান্ডকিউ। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১৯ টাকা ২০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২১১ টাকা ৩০ পয়সা। ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে ছিল মুন্নু সিরামিকস। এদিন কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়। দিন শেষে দাম বেড়েছে ৫ টাকা ২০ পয়সা বা প্রায় আড়াই শতাংশ।