বাণিজ্যযুদ্ধের পারদে ওঠানামা করে পণ্যের দাম

>চীন ও যুক্তরাষ্ট্র যখন পরস্পরের পণ্যে শুল্ক আরোপ কিংবা কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেয়, তখনই আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দামে প্রভাব পড়ে। তবে সেই প্রভাব একেক পণ্যের ওপর একেক রকম পড়ে। তাই তো গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে পণ্যের দামে মিশ্র প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। 

আন্তর্জাতিক পণ্যবাজারে গত সপ্তাহে চীন-মার্কিন উত্তেজনা কম থাকায় মূল্যবান ধাতু সোনার দাম কিঞ্চিৎ কমেছে, যা আগস্টজুড়ে বেড়েছিল। এই সপ্তাহে তার আগের সপ্তাহের তুলনায় সোনা, পামতেল, চিনি ও তুলার দাম কমেছে। অন্যদিকে রুপা, গম, সয়াবিন তেল, কয়লা, জ্বালানি তেলের দাম কমবেশি বেড়েছে। 

সোনা
অতীতে দেখা গেছে, বৈশ্বিক বা আঞ্চলিক রাজনীতিতে উত্তেজনা বা অস্থিতিশীলতা বিরাজ করলে অথবা মন্দার আশঙ্কা থাকলে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার চাহিদা ও দাম বেড়ে যায়। কারণ, অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার পরিস্থিতিতে সোনাকে ‘সেফ হ্যাভেন’ বা ‘নিরাপদ বিনিয়োগ উপকরণ’ হিসেবে গণ্য করা হয়। সেই প্রবণতা আমরা দেখেছি গত আগস্ট মাসে। তবে গত সপ্তাহে সোনার বাজার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা থেকে কিছুটা নমনীয় হয়ে আসে। এর ফলে সোনার দাম কমে ১ হাজার ৪৯৯ ডলারে নেমে আসে, যা আগের সপ্তাহে ১ হাজার ৫০০ ডলারের বেশ ওপরে উঠে গিয়েছিল। চলতি মাসের প্রথম কয়েক দিনে তো সোনার দাম বেড়ে একপর্যায়ে ১ হাজার ৫৪০ ডলার ছাড়িয়েছিল। 

রুপা
সোনার দাম কমলেও গত সপ্তাহে রুপার দাম বেড়েছে। তবে তা খুবই সামান্য, মাত্র ৫৭ সেন্ট। এর ফলে রোপার আউন্সপ্রতি দাম হয়েছে ১৭ দশমিক ৫৭ ডলার। এর আগে চলতি মাসেই পণ্যটির আউন্সপ্রতি দাম ১৮ ডলার পর্যন্ত উঠেছে। 

জ্বালানি তেল
বিশ্ববাজারে কয়েক মাস ধরেই জ্বালানি তেলের দামে কমবেশি ওঠা-নামা লক্ষ করা যাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতা গত সপ্তাহেও দেখা গেছে। এই সপ্তাহে পণ্যটির ব্যারেলপ্রতি দাম প্রায় ২ ডলার বেড়ে ৬০ দশমিক ২২ ডলারে উঠেছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৫৯ দশমিক ৩ ডলার। 

পাম তেল ও সয়াবিন তেল
আন্তর্জাতিক বাজারে গত সপ্তাহে বিভিন্ন ভোজ্যতেলের মধ্য পাম তেলের দাম মোটামুটি কমেছে। টনপ্রতি দাম ৬২ ডলার কমে ৫২৪ ডলারে নেমেছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৫৮৬ ডলার। পামতেলের মতো সয়াবিন তেলের দামও গত সপ্তাহে বেশ কমেছে। প্রতি টনের দাম আগের সপ্তাহের ৭৯৩ ডলার থেকে কমে ৫৮০ ডলারে নেমেছে। অর্থাৎ এক সপ্তাহে পণ্যটির টনপ্রতি দর কমেছে ২১৩ ডলার। 

গম
গমের দাম অবশ্য বেড়েছে। গত সপ্তাহে প্রতি টনে ৬ ডলার বেড়ে পণ্যটির দাম দাঁড়িয়েছে ১৮৭ ডলার, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৮১ ডলার।

চিনি
এই সপ্তাহে চিনির দাম মোটামুটি কমেছে। টনপ্রতি দাম ৫৫ ডলার কমে ২১৫ ডলারে নেমেছে। এই দর আগের সপ্তাহে ছিল ২৭০ ডলার। 

কয়লা
বিশ্ববাজারে এই সপ্তাহে কয়লার দাম টনপ্রতি প্রায় ৫ ডলার বেড়ে ৭০ দশমিক ৪৭ ডলারে উঠেছে। আগের সপ্তাহে এই দর ছিল ৬৫ দশমিক ৬০ ডলার। 

তুলা
আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম বেশ কমেছে। পণ্যটির টনপ্রতি দাম ৪৩০ ডলার কমে ১ হাজার ২৪০ ডলারে নেমেছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৬৭০ ডলার। 

 সূত্র: ব্লূমবার্গ, ইনডেক্সমুন্ডি, মার্কেট ইনসাইডার।