ব্যাংক ঋণ নিয়ে পাতানো খেলা চলছে

দেশে ব্যাংক ঋণ নিয়ে পাতানো খেলা চলছে। সমস্যার প্রকৃত রূপটি সরকার, ব্যাংকার ও ঋণ খেলাপি সবারই জানা। কিন্তু জেনেশুনে সরকার সমাধানের প্রকৃত পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধে এসব কথা বলা হয়। ‘ব্যাংকিং খাত নিয়ে উল্টোপাল্টা পদক্ষেপ বন্ধ করুন: ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করুন’ শীর্ষক গোলটেবিলে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মইনুল ইসলাম।

মূল প্রবন্ধে মইনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের খেলাপি ঋণ ১ লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি। আসলে দেশের খেলাপি ঋণ তিন লাখ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতের ৩০ শতাংশই খেলাপি। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের সমস্যা সমাধানে শক্তিশালী কমিশন গঠন করতে হবে। শীর্ষ খেলাপি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে হবে। দেশে এত ব্যাংকের প্রয়োজন নেই। তাই ব্যাংকগুলো একীভূত করতে হবে।

মইনুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের একজন ব্যবসায়ী নাকি এখন ৭টি ব্যাংকের ওপর মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন। ব্যাংকের মালিকানায় একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সুযোগ অন্য কোনো দেশে চালু আছে কি না, আমার জানা নেই।

অধ্যাপক মইনুল বলেন, ব্যাংক পরিচালকদের নিজেদের মধ্যে ঋণ নেওয়া বন্ধ করতে হবে। ব্যাংক পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসকে বেআইনি ঘোষণা করতে হবে। যাতে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতাকে অন্যায়ভাবে প্রভাবিত করতে না পারে।

আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি কেউ কাউকে পছন্দ করে না। কিন্তু ঋণ খেলাপি সৃষ্টিতে সবাই একমত। এখন জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে গর্ববোধ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর আমলেও ৮ শতাংশের কাছাকাছি জিডিপি ছিল। তিনি কখনো এসব নিয়ে গর্ববোধ করতেন না। আয় বৈষম্য কমিয়ে আনতে বলতেন। চোর ডাকাতের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। চরম বৈষম্যে পৌঁছেছে বাংলাদেশ।

সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় আরও আলোচনা করেন অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার, লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইনাম আহমেদ চৌধুরী, বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান প্রমুখ।