'যান্ত্রিকীকরণ বাড়াবে কৃষির উন্নয়ন'

শ্রমিক সংকটসহ কৃষি কাজের সার্বিক উন্নয়নে যান্ত্রিকীকরণ ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সাত্তার মণ্ডল। সম্প্রতি মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার আজিমপুর গ্রামে ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টারের মাঠ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।

বরেণ্য এই কৃষি অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, আমাদের কৃষিতে যে কয়টি বড় সমস্যা আছে তার মধ্যে শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়া একটি বড় সমস্যা যার ফলে কৃষকের খরচ বেড়ে যায়। ফসল সংগ্রহে যন্ত্র ব্যবহার করায় একদিকে যেমন শ্রমিকের খরচ বাঁচছে, অন্যদিকে অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে শস্য ঘরে তোলা যাচ্ছে, কাজটা সূক্ষ্মভাবে হওয়ায় ফসল অপচয় কম হচ্ছে এবং দ্রুত মাঠ খালি হয়ে যাওয়ায় আরেকটি ফসলের জন্য মাঠকে তৈরি করা যাচ্ছে।

ড. সাত্তার মণ্ডল বলেন, ধান কাটার এসব যন্ত্র ব্যবহারে শুধু ধান উৎপাদন সহজতর হচ্ছে না বরং এসব যন্ত্র ভাড়া দেওয়ার মাধ্যমে একটি উদ্যোক্তা শ্রেণি তৈরি হচ্ছে এবং এর ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে।

উৎপাদনের অগ্রগতিতে বাংলাদেশে এখন ফসল কাটার মৌসুমে শ্রমিক সংকট প্রকট হতে দেখা যাচ্ছে। গত আউশ মৌসুমে শ্রমিক সংকট ছিল পায় ৪০% যার ফলে কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়।

ইয়ানমার কম্বাইন্ড হারভেস্টারের আমদানিকারক এসিআই মটরস। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাস বলেন, এই হারভেস্টার মেশিনটি ধান কেটে মাড়াই, ঝাড়াই করে খড় আস্ত রাখে। ফলে ধান উৎপাদন এবং খড়ের চাহিদা রয়েছে এমন দেশগুলোতে এটি ব্যবহৃত হয়।

তিনি আরও বলেন, কম্বাইন হারভেস্টারটি ঘণ্টায় এক একর ধান কেটে মাড়াই, ঝাড়াই করে বস্তাবন্দী করে দেয়। খরচ বাদ দেওয়ার পরে এক একর জমি থেকে তিন-চার হাজার টাকা লাভ করতে পারে। কেউ যদি যন্ত্রটি তিন মৌসুম চালায় তবে বিনিয়োগ উঠিয়ে আনা সম্ভব।

এসিআই মটরস, ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার যন্ত্রটি সঠিকভাবে চালানোর জন্য সার্ভিস এবং ট্রেনিং এর ব্যবস্থাও করছে।

ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টারের একজন ব্যবহারকারী মানিকগঞ্জ জেলার শফিকুল ইসলাম জানান, আমি যন্ত্রটি ছয় মাস ধরে ব্যবহার করছি। এখন পর্যন্ত তিন শ একরের মতো ধান কাটা হয়েছে। যন্ত্রটি ভালো কাজ করছে। শফিকুল ইসলাম দেশের বিভিন্ন জেলায় হারভেস্টার পাঠিয়ে ধান কাটানোর কাজও করেন।