আধুনিক অর্থশাস্ত্রের জনক অ্যাডাম স্মিথ

আধুনিক অর্থশাস্ত্রের জনক অ্যাডাম স্মিথ। অ্যাডাম স্মিথ স্কটল্যান্ডের ফিফের ক্রিকক্যাল্ডি শহরের একজন রাজস্ব নিয়ন্ত্রকের ছেলে ছিলেন। স্মিথের সঠিক জন্মতারিখ এখনো অজানা। তাঁর বাবার নামও ছিল অ্যাডাম স্মিথ। তিনি স্কটিশ সিনেটের একজন লেখক উকিল এবং অভিশংসক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি কিরক্যালডির শুল্ক বিভাগের নিয়ামক ছিলেন। ১৭২০ সালে তিনি জমিদার রবার্ট ডগলাসের কন্যা মার্গারেট ডগলাসকে বিয়ে করেন। অ্যাডাম স্মিথের বয়স যখন ২ মাস, তখন তাঁর বাবা মারা যান। তাঁর ধর্মশিক্ষা হয় কিরক্যালডির চার্চ অব স্কটল্যান্ডে ৫ জুন ১৭২৩ সালে। এই সালকেই সব সময় তাঁর জন্মসাল হিসেবে মনে করা হয়। স্মিথ তাঁর মায়ের সঙ্গে অনেক ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং তিনিই স্মিথের পড়ালেখা–সম্পর্কিত উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে উৎসাহ দিতেন।

১৪ বছর বয়সে স্মিথ গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, সেখানে তিনি ফ্রান্সিস হাচিসনের অধীনে দর্শনশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। এই গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়েই অধ্যাপনা করার সময়ে তিনি দ্য থিওরি অব মোরাল সেন্টিমেন্টস নামের বইটি লেখেন। ১৭৫৯ সালে লেখা বইটি ছিল অ্যাডাম স্মিথের প্রথম আগমনী বার্তা। বেঁচে থাকতে অ্যাডাম স্মিথকে নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। তাঁর সাধারণ লেখন পদ্ধতি ও শৈলীর কারণে উইলিয়াম হোগার্থ ও জোনাথন সুইফটের মতো লেখক তাঁর বড় সমালোচক ছিলেন।

১৭৬৪ সালে তিনি স্কটল্যান্ডের ডিউক অব বুক্লেয়াহর গৃহশিক্ষক হন। পরের বছর তিনি ডিউকের সঙ্গে ইউরোপ ভ্রমণে বের হন। এই ভ্রমণই তাঁর চিন্তাভাবনাকে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে দেয়।

স্কটল্যান্ডে ফিরে তিনি ওয়েলথ অব ন্যাশনস লেখার কাজ শুরু করেন। টানা আট বছর ধরে তিনি এই বিখ্যাত গ্রন্থ লেখার কাজ শেষ করেন। ১৭৭৬ সালে তাঁর লেখা অ্যান ইনকোয়ারি ইনটু দ্য নেচার অ্যান্ড কজেস অব দ্য ওয়েলথ অব ন্যাশনস বইটি তাঁকে আধুনিক অর্থশাস্ত্রের জনক হিসেবে পরিচিত করেছে। এই বইয়ে তিনি অর্থনীতির মূল বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা দেন৷ এই বইকে ‘বাইবেল অব ইকোনমিকস’ও বলা হয়। বইটি প্রকাশের পরই বিশ্বজুড়ে তাঁর প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ে। বলা হয়, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার স্মিথের লেখা এই বই সর্বদা হাতব্যাগে বহন করতেন।

১৭৭৮ সালে তিনি এডিনবার্গে কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন। আমৃত্যু তিনি এই কাজ করে গেছেন।