কাতারে 'কাফালা' পদ্ধতি বাতিল

অভিবাসী শ্রমিক
অভিবাসী শ্রমিক

শ্রমনীতি সংস্কার করে কাতারের শ্রমবাজারে সাত দশকের পুরোনো কাফালা পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। এ পদ্ধতির কারণে মালিক বা চাকরিদাতা পরিবর্তনের সুযোগ ছিল না শ্রমিকদের। নতুন শ্রমনীতি অনুসারে, শ্রমিকেরা নিজেদের পছন্দমতো চাকরি পরিবর্তনের স্বাধীনতা পাবেন। দেশে ফেরা বা বেড়াতে যেতে অনুমতির কড়াকড়ি কমবে। ন্যূনতম মজুরির বৈষম্যও দূর হবে।

কাতারের শ্রমনীতির এ সংস্কারকে স্বাগত জানিয়ে আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। এতে বলা হয়, কাফালা ব্যবস্থায় অভিবাসী শ্রমিকদের চাকরি পরিবর্তনের জন্য নিয়োগকর্তার কাছ থেকে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) বাধ্যতামূলক ছিল। সামরিক বাহিনী বাদে অন্য কর্মস্থলের শ্রমিকদের চাকরি পরিবর্তন ও বহির্গমনের জন্য অনাপত্তিপত্র বাধ্যতামূলক নয় মর্মে কাতারের মন্ত্রিসভায় একটি ডিক্রিও অনুমোদন করেছে।

অনাপত্তিপত্রের বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়ায় অভিবাসী শ্রমিকেরা তাদের শিক্ষানবিশি মেয়াদের পর পছন্দমতো চাকরি পরিবর্তন করতে পারবেন। এর আগেই চাকরি পরিবর্তন করতে হলে নতুন নিয়োগকর্তা পুরোনো নিয়োগকর্তাকে নিয়োগ সংক্রান্ত বকেয়া খরচ পরিশোধ করবেন। এ ছাড়া বহির্গমন অনুমতির বাধ্যবাধকতা না থাকায় গৃহকর্ম, সরকারি প্রতিষ্ঠান, পানিসম্পদ, কৃষি খাত-সহ সব খাতের শ্রমিকেরাই নিয়োগদাতার অনাপত্তি ছাড়াই সাময়িক বা স্থায়ীভাবে কাতার ছাড়তে পারবেন।

গত ১৬ অক্টোবর কাতারের মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতভাবে নতুন আইনটির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকেই এ আইন কার্যকর হওয়ার কথা। কাফালা বা স্পনসরশিপ ব্যবস্থাটি কাতারে শুরু হয়েছিল ১৯৫০ সালে। মধ্যপ্রাচ্যে কাতারেই প্রথম এ ধরনের আইন কার্যকর হচ্ছে। গালফ সহযোগিতা কাউন্সিল সদস্যভুক্ত দেশগুলোর পাশাপাশি জর্ডান ও লেবাননে এখনো এ ব্যবস্থাটি কার্যকর রয়েছে। এ ছাড়া কাতারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে বৈষম্যহীন ন্যূনতম মজুরি কাঠামো প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন নীতিমালাও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আইএলও এর মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেন, ‘এসব পদক্ষেপ অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার যেমন নিশ্চিত করবে, তেমনি তাদের মাধ্যমে কাতারের সামগ্রিক উৎপাদনশীলতাও বাড়বে, অর্থনীতিও সুসংহত হবে।’
আইএলও বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি টুওমো পোটিয়াইনেন বলেন, ‘কাতারে যে ৪ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক আছেন, তাদের ৭৫ শতাংশই নির্মাণশিল্পে জড়িত। নতুন সংস্কারের কারণে তারা সরাসরি উপকৃত হবেন। এর ফলে বৈষম্যহীন মজুরি ও শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’