যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে চীনে ধনী বেশি

ডলার
ডলার

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন একসময় শীর্ষ অর্থনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে—এ কথা সব বিশ্লেষকই বলছেন। এই ধারাবাহিকতায় এবার খবর এল, বিশ্বের শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনীর কাতারে এখন মার্কিনদের চেয়ে চীনাদের সংখ্যাই বেশি। সম্প্রতি ক্রেডিট সুসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

ক্রেডিট সুসির বৈশ্বিক সম্পদ প্রতিবেদন-২০১৯-এ বলা হয়েছে, চীনা ধনীদের সংখ্যা বাড়ছে। এই মুহূর্তে বিশ্বের শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনীর কাতারে চীনাদের সংখ্যা ১০ কোটি। তবে মার্কিনরাও খুব একটা পিছিয়ে নেই। এই কাতারে তাঁদের সংখ্যা ৯ কোটি ৯০ লাখ। 

অন্যদিকে ১০ লাখ ডলারের মালিক আবার যুক্তরাষ্ট্রেই বেশি। দেশটিতে এ সংখ্যা এখন ১ কোটি ৮৬ লাখ। আর চীনাদের মধ্যে এ সংখ্যা ৪৪ লাখ। দেশটিতে ১০ লাখ ডলারের মালিকের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিম্ন সুদহার ও রিপাবলিকান সরকারের কর হ্রাসের কারণে টানা ১১ বছর ধরে মার্কিন ধনী নাগরিকের সংখ্যা বাড়ছে।

চীন ভালো করছে তা ঠিক। কিন্তু সব ক্ষেত্রে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ধরে ফেলছে, তা নয়। গড়পড়তা একজন মার্কিন নাগরিক চীনা নাগরিকের চেয়ে এখনো অনেক বেশি সম্পদের মালিক। যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মাথাপিছু সম্পদের পরিমাণ ৪ লাখ ৩২ হাজার ৩৬৫ ডলার। আর চীনাদের বেলায় তা মাত্র ৫৮ হাজার ৫৪৪ ডলার। 

কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতিতে চীন এখন সব ক্ষেত্রেই বেশি হিস্যা অর্জন করে নিচ্ছে। একসময় সম্পদ বৃদ্ধিতে ইউরোপ বিশ্বের শীর্ষে ছিল। চীন এখন সেই জায়গা করে নিচ্ছে। বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে গত বছরের মতো এ বছরও চীনের প্রবৃদ্ধির হার কমতির দিকে। তা সত্ত্বেও তাদের এই অগ্রগতি অব্যাহত আছে।

প্রতিবেদনে ক্রেডিট সুসি বলেছে, বাণিজ্য পরিস্থিতি ও ঋণের মাত্রা উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে। তবে ভবিষ্যৎটা ভালোই যাবে বলে মনে হচ্ছে। 

ব্যাপারটা হলো, শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনীর কাতারে উঠতে গেলে নিট সম্পদ লাগবে ১ লাখ ৯ হাজার ৪০০ ডলার। আর শীর্ষ ১ শতাংশে উঠতে লাগবে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৪০০ ডলারের বেশি। 

তা সত্ত্বেও ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর সম্পদ বৈষম্যের চিত্রটা বেশ জটিল। উন্নত দেশগুলোতে কৃত্রিমভাবে সুদের হার কমিয়ে রাখা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর বন্ড কেনার প্রবণতায় সম্পদের দাম তরতর করে বেড়েছে। এতে শীর্ষ ১ শতাংশ ধনীর সম্পদ বেড়েছে। তবে শীর্ষ ১ শতাংশের পরের কাতারের মানুষের বেলায় অসমতা ক্রমেই কমছে। 

২০০০ সালে বিশ্বে নিচের সারির ৯০ শতাংশ মানুষের হাতে ছিল বৈশ্বিক সম্পদের ১১ শতাংশ। এখন সেটা ১৮ শতাংশে উঠেছে। পাশাপাশি, শীর্ষ ১ শতাংশ ধনীর হাতে সম্পদ জড়ো হওয়ার হারও কমেছে। 

প্রতিবেদনের লেখকেরা বলেছেন, ‘সম্পদের বৈষম্য কমতে শুরু করেছে—এ কথা এখনো বলার সময় হয়নি। তবে ২০১৬ সাল থেকে ভবিষ্যতের রূপরেখা দেখা যাচ্ছে।’