দুর্দান্ত লড়াইয়ে জিতল পুলিশ লাইন্স স্কুল বগুড়া

ঢাকার ‘সুতি ভি. এম পাইলট ̄মডেল হাই স্কুল’কে দারুণ নৈপুণ্যে হারিয়ে শিরোপা জিতে নিল বগুড়ার ‘পুলিশ ̄লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। গতকাল বুধবার ‘ক্লিয়ার মেন বাংলাদেশ আন্ডার সেভেনটিন চ্যাম্পিয়নশিপ’এর খেলা হয়। ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে দেশের সবচেয়ে বড় আন্তঃস্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতার এই আসরে চ্যাম্পিয়ন দল ৬-৫ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে।

ম্যাচের শুরু থেকেই ছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। চলছিল একের পর এক পাল্টা আক্রমণ। তবে প্রথমার্ধে পুলিশ ̄লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ একটি গোল করে। দ্বিতীয়ার্ধে ‘সুতি ভি. এম পাইলট মডেল হাই স্কুল’ এক গোল করে। এতে উভয় দলই ছিল সমান সমান। কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মিলল টাইব্রেকারে। এল দুর্দান্ত সব পেনাল্টি শট। একে একে ৬টি গোল করে জয়ের মুকুট ছিনিয়ে নিল বগুড়ার পুলিশ ̄লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ। টুর্নামেন্টের গোল্ডেন বল পুরস্কার পেয়েছেন সুতি ভি. এম পাইলট মডেল হাই স্কুলের সাগর এবং পুরো টুর্নামেন্টে সর্বাধিক গোল করে গোল্ডেন বুট পুরস্কার পেয়েছেন একই দলের মারুফ আহমেদ। অন্যদিকে বেস্ট গোলকিপার হিসেবে গোল্ডেন গ্লফ পুরস্কার পান পুলিশ ̄লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ-এর ফারহান শাহরিয়ার।

পুরো খেলায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)-এর সভাপতি জনাব কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এবং জনাব নাফীস আনোয়ার, মার্কেটিং ডিরেক্টর, বিউটি অ্যান্ড পারসোনাল কেয়ার, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড।

ফুটবলের জনপ্রিয়তাকে আরও বাড়িয়ে প্রতিভাবান ফুটবলারদের লাইম লাইটে নিয়ে আসা এবং স্কুল ফুটবল টিমের নাম জাতীয় পর্যায়ে উজ্জ্বল করাই ছিল এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। আর তাই গত বছরের ধারাবাহিকতায় সারা দেশের ২৭২ টিরও বেশি স্কুল ফুটবল টিমগুলোর অংশগ্রহণে এ বছর ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল এর কার্যক্রম। এই টুর্নামেন্টের সহযোগিতায় ছিল বাফুফে। পুরো অনুষ্ঠানকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ক্লিয়ার মেন-এর সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে টেকনো এবং কিট পার্টনার হিসেবে সেইলর।

৮টি ডিভিশনে ফুটবল লড়াইয়ের পর ফাইনালে উঠেছে রাজশাহী ডিভিশন থেকে ‘পুলিশ ̄লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ এবং ঢাকা ডিভিশন থেকে ‘সুতি ভি. এম পাইলট মডেল হাই স্কুল’। কোয়াটার ফাইনালে পুলিশ ̄লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ তাদের বিপক্ষ দলের সঙ্গে ১-০ ও পরবর্তীতে ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সেমিফাইলে বিপক্ষ দলের সঙ্গে ২-০ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে মাঠ ছাড়ে। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলার নৈপুণ্য দেখিয়ে মুগ্ধ করেছে ফুটবলপ্রেমীদের। সেই ধারা বজায় রেখেছিল গতকালকের ম্যাচেও। শুরু থেকেই আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসেছিল পুলিশ ̄লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

বিজয়ী দলের পুরস্কারের পাশাপাশি ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল বিভিন্ন রকম সুযোগসুবিধারও। সম্পূর্ণ টুর্নামেন্ট থেকে বাছাইকৃত ৩৬ ফুটবলারকে দেশি ও বিদেশি কোচিং স্টাফের অধীনে বিকেএসপিতে দেওয়া হবে ৩ সপ্তাহের ট্রেনিং। এ ছাড়া সেরা ৬ ফুটবলারকে বিখ্যাত ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে এই ইভেন্টে ক্লিয়ার মেন এর অন্যতম সহযোগী ‘টেকনো’। সেখানে ফুটবলাররা ৭ দিন অবস্থানের পাশাপাশি একাডেমি কোচের ট্রেনিং সেশনেও অংশগ্রহণ করবে। সেইসঙ্গে ম্যানচেস্টার সিটির হোম গ্রাউন্ড ইত্তেহাদ স্টেডিয়ামে একটি ম্যাচ উপভোগ করার সুবর্ণ সুযোগ পাবে।

আয়োজকদের আশা, দেশের আনাচে কানাচে থেকে প্রতিভাবান ফুটবলার খুঁজে বের করে দেশের ফুটবলকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আগামীতে এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে।