পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর সিন্ডিকেটে কারা?

পেঁয়াজ। ফাইল ছবি
পেঁয়াজ। ফাইল ছবি

মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ কেনা দামের চেয়ে প্রায় তিন গুণ দামে বিক্রির পেছনে জড়িত আছেন কক্সবাজারের টেকনাফ ও চট্টগ্রামের ১৫ জনের একটি সিন্ডিকেট। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের যৌথ অনুসন্ধানে তাঁদের নাম উঠে এসেছে। এসব ব্যক্তি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের টেকনাফভিত্তিক পেঁয়াজ আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও আড়তদার।

গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সেলিম হোসেন নগরের খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই ও রেয়াজউদ্দিন বাজার পরিদর্শন করেন। একই সময়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

পরিদর্শন শেষে উপসচিব সেলিম হোসেন আমদানি মূল্য, পরিবহন, শ্রমিক, মুনাফা ও বিবিধ খরচসহ সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে মিয়ানমারের পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে ৫৫-৬০ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ৬৫-৭০ টাকা দরে বিক্রির নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সিন্ডিকেটে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের এই তালিকাও করা হয়। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহিদা ফাতেমা চৌধুরী, বাজার পরিদর্শক বিল্লাল হোসেন এবং পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

>

মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে ১৫ জনের সিন্ডিকেট।
পাইকারি বাজারে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রির নির্দেশ।

এই সিন্ডিকেট ৪২ টাকায় মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে ৯০ থেকে ১১০ টাকায় পাইকারি বাজারে বিক্রি করে আসছিল বলে অভিযোগ ওঠে। গত রোববার খাতুনগঞ্জে অভিযান চালিয়ে এই অভিযোগের প্রমাণ পান ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বারবার সতর্ক করার পরেও মাত্রাতিরিক্ত দামে মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি করায় গতকাল খাতুনগঞ্জের গ্রামীণ বাণিজ্যালয়কে ৫০ হাজার টাকা এবং রেয়াজউদ্দিন বাজারের রুহুল আমিন সওদাগরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সিন্ডিকেটে কারা?
জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ অনুসন্ধানে মিয়ানমারের পেঁয়াজের কারসাজিতে জড়িত ব্যক্তিরা হলেন মো. সজিব (আমদানিকারক), মম (আমদানিকারক), মো. জহির (আমদানিকারক), মো. সাদ্দাম (আমদানিকারক), মো. কাদের (সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট), মো. শফি (দালাল), মো. ফোরকান (বিক্রেতা), মো. গফুর (বিক্রেতা), মিন্টু (বিক্রেতা), মো. খালেক (বিক্রেতা) ও টিপু (বিক্রেতা)। এ ছাড়া সিন্ডিকেটে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো খাতুনগঞ্জের মেসার্স আজমীর ভান্ডার, মেসার্স আল্লাহর দান স্টোর, স্টেশন রোডের মেসার্স সৌরভ এন্টারপ্রাইজ, এ হোসেন ব্রাদার্স, টেকনাফের মেসার্স আলীফ এন্টারপ্রাইজ।

এদের মধ্যে মো. জহির ও মো. ফোরকান কোনো সিন্ডিকেটে জড়িত নেই বলে দাবি করে প্রথম আলোকে বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। ফলে বাজারে চাহিদার ঘাটতির কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। কোনো সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে না।