নাটোরের পাঁচ বাজারে পেঁয়াজসহ সবজির দাম চড়া

স্টেশন কাঁচাবাজার আড়তে পেঁয়াজসহ সবজির সরবরাহ একেবারেই কম। দামও আকাশছোঁয়া। স্টেশন কাঁচাবাজার আড়ত, নাটোর, ১৮ নভেম্বর। ছবি: মুক্তার হোসেন
স্টেশন কাঁচাবাজার আড়তে পেঁয়াজসহ সবজির সরবরাহ একেবারেই কম। দামও আকাশছোঁয়া। স্টেশন কাঁচাবাজার আড়ত, নাটোর, ১৮ নভেম্বর। ছবি: মুক্তার হোসেন

শীত চলে এলেও নাটোরের বাজারে পেঁয়াজসহ সব ধরনের সবজির দাম এখনো আকাশছোঁয়া। পণ্য কেনার আগে ক্রেতা-বিক্রেতায় চলছে বাগ্‌বিতণ্ডা। সরবরাহ কম থাকায় বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী বলে জানান বিক্রেতারা।

সোমবার ভোর ছয়টা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত নাটোরের অন্তত পাঁচটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজসহ সব ধরনের সবজির দাম এখনো আকাশছোঁয়া। শীতের মৌসুমের শুরুতে বাজারে যে পরিমাণ শাক সবজি আমদানি হওয়ার কথা, তা চোখে পড়েনি। দেশের কোথাও কোথাও নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলেও আজ (১৮ নভেম্বর) বাজারে নতুন পেঁয়াজের দেখা মেলেনি। সকাল সাতটায় নাটোর রেলস্টেশন কাঁচাবাজার আড়তে গিয়ে দেখা যায়, শুধু পুরোনো পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দামও চড়া। পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ১৭০ টাকা থেকে ২৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজ না থাকলেও পেঁয়াজের পাতা বিক্রির জন্য এনেছেন এক চাষি। তিনি প্রতি কেজি পাতা বিক্রি করছেন ২০ টাকা দরে।

আড়তদার মেজবা উন নবী জানান, নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা উপজেলার হালতি বিল এলাকায় প্রচুর পেঁয়াজের চাষ হয়। কিন্তু বারবার বৃষ্টির কারণে চাষিরা পেঁয়াজ আবাদ করেছেন দেরিতে। তাই বাজারে নতুন পেঁয়াজ এখনো আসেনি। দুই-চার দিনেই নতুন পেঁয়াজ আসা শুরু করবে। তখন এমনিতেই দাম পড়ে যাবে।

স্টেশন কাঁচাবাজারে নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। তবে দাম অনেক বেশি। প্রতি কেজি নতুন আলুর (লাল) পাইকারি দর ১০০ টাকা। তবে সাদা নতুন আলু ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পুরোনো আলুর কেজি ২০ থেকে ২১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিম প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে । মুলা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে।

স্টেশন কাঁচাবাজার থেকে মাত্র এক কিলোমিটার ব্যবধানে নিচাবাজারে প্রতিটি পদের কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এখানকার বাজারেও আজ নতুন পেঁয়াজের দেখা মেলেনি। এখানকার সবচেয়ে বড় সবজি বিক্রেতা পচু মিয়া জানান, স্টেশন বাজারে পাইকারি বিক্রি হয়। তাই এখানে খুচরাতে সামান্য কিছু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ কম হওয়ায় সবজির দাম কমছে না।

পুরোনো বাসস্ট্যান্ড কাঁচাবাজার, দত্তপাড়া বাজার ও তেবাড়িয়া কাঁচাবাজারেও উচ্চমূল্যে সবজি বিক্রি করতে দেখা গেছে।

জেলায় পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় বাজার নলডাঙ্গা হাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে সামান্য কিছু নতুন পেঁয়াজ এলেও তা খুচরা বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। পাতাসহ এসব পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। লালপুর বাজার থেকে সবজি বিক্রেতা সোয়াহার মোল্লা জানান, লালপুরের পদ্মা নদীতীরবর্তী এলাকায় প্রচুর পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। কিন্তু নতুন পেঁয়াজ এখনো তোলেননি চাষিরা। তাই পুরোনো পেঁয়াজ ১৭০ থেকে ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। জেলার মৌখাড়া, বনপাড়া ও চাঁচকৈড় আড়তেও সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

জেলা ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শামশুল ইসলাম জানান, সবজির চড়া দামের ব্যাপারে কেউ তাঁদের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে বাজারে পেঁয়াজসহ সব ধরনের সবজির দাম চড়া। অভিযোগ পেলে যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।