শিথিল হলো ক্রেডিট কার্ডে কড়াকড়ি

ক্রেডিট কার্ডে আন্তর্জাতিক লেনদেনে যে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল, তা থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে কার্ডের আন্তর্জাতিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে পৃথক হিসাব রাখার প্রয়োজন হবে না। তবে ‘অবৈধ লেনদেন’ বন্ধে ব্যাংকগুলো ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে অনলাইন ক্যাসিনো, ফরেক্স ট্রেডিং, বিদেশি শেয়ারবাজারে লেনদেন, ক্রিপ্টো মুদ্রা, বিদেশি লটারি ও বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য ক্রেডিট কার্ড দিয়ে না কেনা যায়।

রোববার প্রজ্ঞাপন দিয়ে নীতিমালা শিথিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়, লেনদেনে আলাদা ফরম লাগবে না। তবে অবৈধ লেনদেন বন্ধে ব্যাংকগুলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

সাধারণত একজন বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা ও ১২ হাজার ডলার পর্যন্ত ব্যবহারের সুযোগ পান। এর মধ্যে সার্কভুক্ত দেশে পাঁচ হাজার ডলার ও সার্ক বহির্ভূত দেশে সাত হাজার ডলার। কার্ডের মাধ্যমে বিদেশি লেনদেনেও এ সীমা প্রযোজ্য। তবে কার্ডের মাধ্যমে অনলাইন কেনাকাটায় প্রতিটি লেনদেনের সীমা সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার। এভাবে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে সীমার মধ্যে যে কোনো বাংলাদেশি চাহিদা মতো বৈধ কেনাকাটা করতে পারবেন। যা এখনো বহাল আছে।

রোববার এ নিয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরই প্রজ্ঞাপন জারি হয়। আর কার্ড দিয়ে ফেসবুক ও গুগলের সেবা মাশুল পরিশোধ নিয়ে যে সমস্যা হয়েছে, তা নিয়ে আগামী ২৮ নভেম্বর আবারও আলোচনায় বসবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ক্রেডিট কার্ড নিয়ে কড়াকড়ি আরোপের ১০ দিনের মাথায় সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসল বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১৪ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বিদেশি অবৈধ লেনদেন করা যাবে না। পাশাপাশি কার্ডে কী ধরনের লেনদেন হচ্ছে, গ্রাহকদের তারও হিসাব রাখতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আলাদা একটি ফরমও নির্দিষ্ট করে দেয়।

এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়াকড়ির কারণে ফ্রিল্যান্স ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সম্পৃক্ত অনেকেই বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানান। গত শনিবার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ জানান, শিগগির এ কড়াকড়ি শিথিল করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্ট পর্যন্ত দেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ লাখ ৩ হাজার ৪২৭ জন। গত জুনে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১৩১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে জুন মাসে ২০ লাখ ৮৫ হাজারবার কার্ড ব্যবহৃত হয়েছে। এপ্রিল ও মে মাসে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন ছিল যথাক্রমে এক হাজার ১০৮ ও এক হাজার ২৫৩ কোটি টাকা।