প্রধানমন্ত্রীকেও পেঁয়াজ রপ্তানির বিষয়ে কথা দিয়েছিল ভারত: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ফাইল ছবি
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ফাইল ছবি

মহারাষ্ট্রের রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের পর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি আবার চালু করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কথা দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্য, তারা খুলে দেয়নি।’

২৪ অক্টোবর মহারাষ্ট্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করেন। সফরসঙ্গী ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেও।

টিপু মুনশি বলেন, ‘ভারত সফরকালে ভারত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও (শেখ হাসিনা) কথা দিয়েছিল যে নির্বাচনের পর পেঁয়াজ রপ্তানি খুলে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) আয়োজিত এক সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে চাহিদা, সরবরাহ ও যৌক্তিক মূল্যের ব্যবস্থাপনা নিয়ে আয়োজিত এ সভায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মুনতাকিম আশরাফ, মো. সিদ্দিকুর রহমানসহ বিভিন্ন পণ্য ও খাতের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়াকেই বাংলাদেশে মূল্যবৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ বলে উল্লেখ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বছরের এ সময়ে যেখানে মাসে এক লাখ টন আসত, সেখানে ভারত বন্ধ করার পর ২৫ হাজার টন আসছে। এর মানে আমদানিতে প্রায় ৭৫ হাজার টন ঘাটতি। তাঁর মতে, দ্বিতীয় কারণটি হলো ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে মিয়ানমার থেকে কয়েকদিন আমদানি বন্ধ থাকা।

সরকারি সংস্থার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম, শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম ও খাদ্যসচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ভারতের রপ্তানি বন্ধের পর পেঁয়াজ আমদানিতে নানা পদক্ষেপের কথা জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অন্য দেশ থেকে জাহাজে আনতে ১২–১৪ দিন লাগে বলে মনে করেছিলাম। ধারণা ছিল না ২৪–২৫ দিন লাগবে। আমি ছিলাম অস্ট্রেলিয়ায়, প্রতিদিন ৭–৮ বার ফোন করেছি।’

এ সময় সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, ছয় থেকে সাত দিনের মধ্যে পেঁয়াজ আসবে। বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, ‘আপনার জাহাজ ২৯ নভেম্বর প্রথম আসবে, সেটা আমি জানি।’

উড়োজাহাজে ৪০০ টনের মতো পেঁয়াজ আসার কথা জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সত্যি কথা কি, আমাদের যা লাগবে, সব আছে, এটা বললে ঠিক কথা বলা হবে না। তাহলে এই হিসাব কেন দিলাম যে আমাদের আনতে হচ্ছে।’

১০ দিনে মধ্যে আমদানি করা বড় চালান এসে যাবে ও দেশি পেঁয়াজ উঠবে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, উড়োজাহাজে আনতে অনেক খরচ। এ পেঁয়াজ বাজারে ছাড়লে উপকার হবে না। সরকার সেটা নিয়ে ৪৫ টাকা কেজিতে মানুষকে খাওয়াচ্ছে। জাহাজে আনা পেঁয়াজ বড় কোম্পানিগুলো বিক্রি করবে। সেটার খরচ কম হবে। তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা বাজারে ৬০–৭০ টাকায় জাহাজে আনা পেঁয়াজ বিক্রি হবে।’

এ সময় ব্যবসায়ীরা বলেন, আরও কম হবে। বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে আসতে মোট খরচ কেজিপ্রতি ৩২ টাকা পড়বে, সেটা আমি জানি। তারপরও ভয়ে ভয়ে কিছুটা বাড়িয়ে বললাম।’
এস আলম, মেঘনা ও সিটি গ্রুপ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে পেঁয়াজ আমদানি করছে।