ঢাকা ব্যাংকের 'গো'

বাসাভাড়া, বাজার, ড্রাইভার ও দারোয়ানের বেতন, ক্রেডিট কার্ডের বিল সবই অ্যাপস দিয়ে পরিশোধ করেন ঢাকা ব্যাংকের গ্রাহক কামরুল হাসান। এ জন্য তাঁকে ব্যাংকের শাখায় যেতে হয় না। এমনকি অন্য ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের বিল দিতেও না। টাকা তুলতে এটিএম বুথেও যাওয়া লাগে না। মাঝেমধ্যে কেনাকাটা করতেও ছাড় পান। আবার বিমানভাড়া, হোটেল, রেস্তোরাঁতেও রয়েছে নানা ছাড়।

এতসব সুবিধা মিলছে ঢাকা ব্যাংকের গো অ্যাপসে। যাতে ঘরে বসেই গ্রাহকেরা চাহিদামতো আর্থিক কার্যক্রম সারতে পারছেন।

 ঢাকা ব্যাংক গো অ্যাপস সেবা খুব বেশি দিনের নয়। ২০১৭ সালের মে মাসে ছোট আকারে চালু হয় সেবাটি। ব্যাংকটির রিটেইল সেবার গ্রাহকেরা এর গ্রাহক হতে পারেন। এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার গ্রাহক অ্যাপসটি ব্যবহার করছেন। আর প্রতি মাসেই এক হাজার করে গ্রাহক বাড়ছে। গুগল প্লে স্টোরে রেটিং ৪ দশমিক ৬।

অ্যাপসটা ব্যবহারে দেখা গেছে, যতটা সুবিধা, ঠিক ততটাই নিরাপদ। কারণ, প্রতিটি লেনদেনের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড, যা মোবাইলে ফোন যায়, এরপরই লেনদেনটি কার্যকর হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, নিরাপত্তা নিশ্চিতে গ্রাহকেরা সর্বোচ্চ তিনটি মোবাইল ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ থেকে গো অ্যাপসটি ব্যবহার করতে পারেন। ইন্টারন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি (আইএমই) নম্বরের মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন হয়, ফলে চাইলেও অন্য ডিভাইস ব্যবহার করে হিসাবের লেনদেন করা সম্ভব না। আবার প্রতি ছয় মাস পরপর বাধ্যতামূলক পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে হয়।

এতসব নিরাপত্তা আর ব্যবহারের উপযোগী সেবা পেতে আপনাকে ঢাকা ব্যাংকের গ্রাহক হতে হবে। এরপরই ব্যবহার করা যাবে গো অ্যাপস। ঢাকা ব্যাংকের গ্রাহকেরা চাইলেই কিউ আর কোড বা প্লে স্টোর থেকে নামিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। কিউ আর কোড মিলবে ওয়েবসাইট, ব্যাংকের যেকোনো ফরম বা শাখায় ঝোলানো ব্যানারে।

গো অ্যাপে প্রয়োজনীয় সব সেবাই পান ঢাকা ব্যাংকের গ্রাহকেরা। স্থায়ী আমানত করা, ডিপিএস খোলা, পে–অর্ডার আবেদন, লেনদেন বিবরণী দেখা, নিজের হিসাব দেখা, পরিষেবা ও কার্ডের বিল পরিশোধ।

ব্যাংকটি জানায়, অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রাহকেরা প্রতি মাসে ১৫ হাজারের বেশি লেনদেন করছে। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ঢাকা ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে প্রতি মাসে ৩ হাজার লেনদেন হয়। টাকার অঙ্কে যা ৩ কোটি টাকা। ঢাকা ব্যাংকই প্রথমবারের মতো গ্রাহকদের সরাসরি বিকাশ হিসেবে টাকা স্থানান্তরের সুবিধা চালু করে। এখন প্রতি মাসে ৭ হাজার লেনদেন হয়। প্রায় ২ কোটি টাকা স্থানান্তর হয় বিকাশে। আর অ্যাপস থেকে মোবাইল রিচার্জ ও বিভিন্ন পরিষেবা বিলও দেয় গ্রাহকেরা। অ্যাপসের মাধ্যমে সেবা নিতে কোনো মাশুলও গুনতে হয় না।

বর্তমানে ব্যাংকটির এই অ্যাপসের মাধ্যমে ১৭টি ব্যাংকে তাৎক্ষণিক টাকা স্থানান্তর করা যায়। এমনকি এসব ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের বিলও দিতে পারবেন। এ জন্য কোনো মাশুলও গুনতে হয় না। যদিও শাখায় গিয়ে টাকা পাঠাতে গুনতে হয় মাশুল। ব্যাংকগুলো হলো আল-আরাফাহ, কমার্স, ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক, ডাচ্‌–বাংলা, ইসলামী, মিডল্যান্ড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, পূবালী, সীমান্ত, দি সিটি, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, এক্সিম, ফার্স্ট সিকিউরিটি, ট্রাস্ট, এবি ও স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।

ঢাকা ব্যাংকের রিটেইল ও ডিজিটাল পণ্য বিভাগের প্রধান তাহসিন তাহের প্রথম আলোকে বলেন, গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় সব সেবাই গো অ্যাপে আছে। আমরা আরও নতুন নতুন সেবা যুক্ত করার চেষ্টা করছি। আর নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিচ্ছে ঢাকা ব্যাংক।