১০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ পাচ্ছে পেটিএম

ভারতের একটি পেটিএম সেবাকেন্দ্র। ছবি: রয়টার্স
ভারতের একটি পেটিএম সেবাকেন্দ্র। ছবি: রয়টার্স

ভারতীয় স্টার্টআপগুলোর মধ্যে চলতি বছরের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ পেয়েছে ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি পেটিএম। গতকাল সোমবার পেটিএম দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি টি রাওয়ে প্রাইসের নেতৃত্বে বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আলিবাবা, সফট ব্যাংক ও ডিসকভারি ক্যাপিটাল নতুন করে এই বিনিয়োগ করেছে। এর পরিমাণ ১০০ কোটি মার্কিন ডলার। এশিয়া টাইমস সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে।

পেটিএমের মূল কোম্পানি ওয়ান ৯৭-এর প্রধান নির্বাহী বিজয় শংকর বলেছেন, এ বিনিয়োগের মধ্যে চীনের আলিবাবার মূল কোম্পানি অ্যান্ট ফিন্যান্সিয়াল দিচ্ছে ৪০ কোটি এবং সফট ব্যাংক দিচ্ছে ২০ কোটি ডলার।

আর্থিক সেবার পরিসর বাড়াতে আগামী তিন বছরে ১৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ আনতে চায় পেটিএম। ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এই ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা পৌঁছে দিতে চায় তারা। এখন ভারতে ৬০০টি জেলার দুই হাজার শহরে পেটিএম সেবা দিচ্ছে। কম দামের ফোনেও পরিচালনা করা যায়—এমন সেবা ভারতের দূরদূরান্ত পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাইছে তারা। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ভারতের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে আগামী তিন বছরে তারা ১৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে।

এ বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে পেটিএম এখন ভারতের সবচেয়ে মূল্যবান স্টার্টআপ। কোম্পানিটির নিরূপিত মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। আগস্টে পেটিএমের কিছু কর্মী নিউইয়র্কভিত্তিক এক কোম্পানির কাছে শেয়ার বিক্রি করে দিলে তার মূল্যমান কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।

এর আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওয়ারেন বাফেটের বার্কশায়ার হাথওয়ে কোম্পানি পেটিএমে ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে। তখন তারা কোম্পানির মূল্য নিরূপণ করেছিল ১ হাজার কোটি ডলার। নতুন এ বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে পেটিএমে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াল ৩৫০ কোটি ডলার।

ওয়ান ৯৭-এর প্রধান নির্বাহী আরও দাবি করেন, পেটিএমের পেমেন্ট ও টিকিট ব্যবসা ক্ষতির চক্র থেকে বেরিয়ে এসেছে। এসব ব্যবসার আয়–ব্যয় প্রায় সমান। ফলে এখন তারা বিমা ও আর্থিক সেবার পরিসর বাড়াতে চায়।

কিন্তু ভারতের সমন্বিত পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর ডিজিটাল আর্থিক সেবায় পেটিএমের প্রভাব কমতে শুরু করেছে। ডিজিটাল ওয়ালেটের বাজারও একরকম থমকে আছে। এ বছরের জুলাই মাসে পেটিএমে যেখানে লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি, সেখানে গুগল পে ও ফোনপেতে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটির মতো।

নতুন বিনিয়োগ পেলেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ওয়ান ৯৭-এর নেট ক্ষতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। এ সময়ে তার রাজস্ব বৃদ্ধির হারও খুব কম। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগের আগে নানা শর্ত জুড়ে দিয়েছে। সফট ব্যাংক বলেছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পেটিএমকে শেয়ারবাজারে আসতে হবে। অন্যদিকে সফট ব্যাংক বলছে, শেয়ারবাজারে আসার আগে করপোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।