ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোর আগ্রহ কমছে : ব্যাংকিং সম্মেলনে বক্তারা
ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলো আগ্রহ দেখাচ্ছে কম। এর কারণ খেলাপি ঋণের বাড়বাড়ন্ত ও ঋণ পরিশোধে অনীহা। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ধরে রাখতে ব্যাংকের ঋণ প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে। খুঁজতে হবে ঋণের নতুন খাত ও শিল্প।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে আলোচকেরা এই মত দেন। বুধবার মিরপুরের বিআইবিএমে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ৮ম ব্যাংকিং সম্মেলন।এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান।
মূল প্রবন্ধের সূত্র ধরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণে অনীহা কোনোভাবেই ভালো লক্ষণ নয়। বেসরকারি খাতের স্বার্থে ব্যাংকারদের ঋণ দিতে নতুন খাত বের করতে হবে। ব্যাংকগুলোকে নিজেদের ভাবমূর্তি ধরে রাখতে নিয়মকানুন পরিপালনের উত্তম চর্চা করতে হবে, যাতে গ্রাহক, বিনিয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিশ্বাস অর্জন করা যায়।
সম্মেলনের মূল প্রবন্ধে বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান ২০১৮ সালের ব্যাংকিং কার্যক্রম তুলে ধরে বিভিন্ন মতামত দেন। বলেন, ২০১৮ সালে মাত্র ২০ শতাংশ ব্যাংক নতুন খাত ও শিল্পে ঋণ দিয়েছে। নতুন খাতে ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোর অনীহাও বেশি ছিল। গত বছরে কৃষি ঋণ বিতরণ কমেছে ৯ শতাংশ। চলমান তারল্য সংকট কৃষি খাতে ঋণ বিতরণে আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
মো. আখতারুজ্জামান আরও বলেন, ২০১৮ সাল শেষে ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে। অর্থ ঋণ আদালতে আরও ৭৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে মামলা চলছে।
ব্যাংকের ঋণ নিয়ে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, একজন বড় ব্যবসায়ীকে অনেকগুলো ব্যাংক মিলে ঋণ দেয়। এতে অনেক সময় চাহিদার বেশি ঋণ চলে যায়। এটা গ্রাহকদের অন্য খাতে ঋণ ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়। সুশাসন সূচকে ব্যাংকের উন্নতি হলে ঋণের মান ভালো হবে।
উদ্বোধনের পর এক অধিবেশনে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের কারণ নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক শামীমা নাসরিন। প্রবন্ধে তিনি বলেন, অনেক সময় গ্রাহকেরা ইচ্ছা করেই খেলাপি হয়ে পড়ে। ফলে অন্য গ্রাহকেরাও খেলাপি হতে উৎসাহিত হয়। ঋণ খেলাপির সংস্কৃতি এভাবেই তৈরি হয়, যা আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও স্থিতিশীলতায় ব্যাঘাত ঘটায়।
সম্মেলনের প্রথম দিনে ২টি অধিবেশনে ১২টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। দুটি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন ও এস কে সুর চৌধুরী।