টাকা পাচারের ১৫ মামলায় ব্যবসায়ী দিদারুল গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

টাকা পাচারের ১৫টি মামলার আসামি দিদারুল আলম (টিটু) নামের এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। একই সঙ্গে তার সহযোগী কবির হোসেনকেও গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সোমবার ঢাকার বিজয়নগরের মাহতাব সেন্টার থেকে দিদারুল ও কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের পর বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিষয়টি জানায় শুল্ক গোয়েন্দা। এতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া থাকবেন বলে জানানো হয়েছিল, যদিও তিনি ছিলেন না। 

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সহিদুল ইসলাম কয়েকটি বড় শুল্ক ফাঁকির ঘটনায় দিদারুলকে ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তিনটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের ঋণপত্র খুলে পোলট্রি খাবার আমদানির ঘোষণা দিয়ে ১২১টি কনটেইনারে বিপুল পরিমাণ মদ, সিগারেট ও ফটোকপিয়ার যন্ত্র আমদানি করা হয়েছে। এতে ১ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা মানি লন্ডারিং (টাকা পাচার) হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা বলছে, দিদারুল আলমের সহযোগী কবির হোসেন কম্পিউটারে জাল দলিল তৈরিতে দক্ষ। তিনিই নানা ভুয়া নথি তৈরি করে শুল্ক ফাঁকি দিতে সহায়তা করতেন।
দিদারুল আলম মিরর ডেভেলপমেন্ট নামের একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশনের (রিহ্যাব) ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি সংগঠনটির সদস্য। বিজয়নগরের মাহতাব সেন্টারেই মিরর ডেভেলপমেন্টের কার্যালয়।
শুল্ক গোয়েন্দার দাবি, দিদারুল আলম ও তার সহযোগী কবির হোসেন এবং আবদুল মোতালেব ও অন্যান্য সহযোগীরা মেসার্স অ্যাগ্রো বিডি অ্যান্ড জেপি, হেনান আনহুই অ্যাগ্রো এলসি ও হেব্রা ব্র্যাঙ্কো নামের তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি করেছেন। এ ঘটনায় শুল্ক গোয়েন্দা পল্টন থানায় মেসার্স অ্যাগ্রো বিডি অ্যান্ড জেপির বিরুদ্ধে ৭ নভেম্বর বিভিন্ন আইনে ৯টি মামলা করে। এতে ৪৩২ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও আনা হয়। ওই দিন হেনান আনহুই অ্যাগ্রো এলসির নামে একই থানায় ৬টি মামলা করা হয়। হেব্রা ব্র্যাঙ্কোর বিরুদ্ধে করা হয় ৭টি মামলা। আসামি কবির হোসেনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের একটি মামলা রয়েছে। গত ৩০ আগস্ট মামলাটি করা হয়েছিল।
২০১৭ সালের নভেম্বরে মিথ্যা ঘোষণায় ১২ কনটেইনার মদ, সিগারেট ও ফটোকপি যন্ত্র আমদানির ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে তিন প্রতিষ্ঠানের শুল্ক ফাঁকির ঘটনা উদ্‌ঘাটিত হয় বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। দোষীদের ধরতে এত সময় লাগল কেন জানতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দার মহাপরিচালক সহিদুল ইসলাম বলেন, ঋণপত্রে নাম একজনের, ছবি আরেক জনের ব্যবহার করা হয়েছে। পেছনে কে তাও খুঁজে বের করতে হয়েছে। কোথা থেকে ধরলে প্রমাণসহ পাওয়া যাবে, তাও মাথায় রাখতে হয়েছে। এসব কারণেই দেরি।
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহিদুল ইসলামের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। এটি উল্লেখ করে একজন সাংবাদিক বিষয়টি নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চান। জবাবে সহিদুল ইসলাম এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে দুদককে জিজ্ঞাসা করলেই ভালো হয়।