মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সোয়া লাখ টাকা পর্যন্ত প্রবাসী আয় তোলা যাবে

বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে একবারে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত রেমিট্যান্স মানে প্রবাসী আয় উত্তোলন করা যাবে। এর ফলে বিকাশ ও রকেটের মতো মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠাগুলোর সক্রিয়তা বাড়বে এবং প্রবাসী আয় বিতরণ আরও সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনেক ব্যাংক ও রেমিট্যান্স আনা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও রকেটের মতো কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের কাছে প্রবাসী আয় পৌঁছে দেয়। সাধারণত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দিনে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন বা ক্যাশ আউট করা যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক গত সোমবার প্রবাসী আয় বিতরণ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ‘বৈধ উপায়ে প্রেরিত রেমিট্যান্স নগদ প্রণোদনাসহ সুবিধাভোগীর মোবাইল হিসাবে বিতরণ’ শীর্ষক ওই প্রজ্ঞাপন সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা রেমিট্যান্সের অর্থ নগদ প্রণোদনাসহ সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যাংক কর্তৃক সরাসরি সুবিধাভোগীর এমএফএস হিসাবে প্রদান করা যাবে। রেমিট্যান্সের অর্থ ব্যতীত লেনদেনের অন্য সব শর্ত আগের মতোই থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী, সাধারণত দিনে পাঁচবারে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত তোলা বা ক্যাশ আউট করা যায়। মাসে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করা যায়। এর বেশি টাকা উত্তোলনের সুযোগ নেই। তবে প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে তা শিথিল করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সরকারি প্রণোদনা প্রদান ও মার্কিন ডলারের বিনিময়মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসার ধারাবাহিকতা দেখা যাচ্ছে। গত নভেম্বর মাসে প্রবাসীরা ১৫৬ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন। আগের মাস অক্টোবরে তাঁরা পাঠিয়েছিলেন ১৬৪ কোটি ডলার। সেই হিসাবে আগের মাসের তুলনায় গত মাসে প্রবাসী আয় কিছুটা কমেছে। তবে ২০১৮ সালের নভেম্বরের তুলনায় গত নভেম্বরে প্রবাসী আয় বেড়েছে। গত বছরের নভেম্বরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ১১৮ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩২ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে ৭৭২ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। আগের বছরের একই সময়ে এসেছিল ৬২৯ কোটি ডলার। এ হিসাবে পাঁচ মাসে প্রবাসী আয় বেড়েছে ১৪৩ কোটি ডলার, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ২৩ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে প্রবাসীরা ১০০ টাকা দেশে পাঠালে ২ টাকা প্রণোদনা পাচ্ছেন। বাজেটে এ জন্য ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে ব্যাংকগুলো অক্টোবর থেকে প্রণোদনা দেওয়া শুরু করে। যদিও জুলাই থেকে আসা আয়ে প্রণোদনা পাওয়া যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত প্রবাসী আয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রণোদনা দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। দেড় লাখ টাকার বেশি আয় এলে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা সাপেক্ষ প্রণোদনা পাবেন গ্রাহকেরা।