অর্থমন্ত্রী ও এনবিআর চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন শেখ ফাহিম

এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। প্রথম আলোর ফাইল ছবি
এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। প্রথম আলোর ফাইল ছবি

ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা দূর করতে না পারায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম।

তিন দিনের সিরামিক পণ্যের প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ বৃহস্পতিবার এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে গত দশ বছরে সিরামিক খাতে ৮ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০০ শতাংশ। এফবিসিসিআই মনে করে, তৈরি পোশাকের পর সম্ভাবনাময় খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সিরামিক। পোশাক খাত যেসব সুবিধা পায়, তা এসব খাতে দেওয়া উচিত। তবে তা অনুপস্থিত।

শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, আজকে এখানে এনবিআর চেয়ারম্যানের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। এটি দুঃখজনক যে, আজকের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অনেক দেশি বিদেশি ব্যবসায়ী উপস্থিত থাকলেও তিনি অনুপস্থিত। অবশ্য তাঁর অনুপস্থিত থাকার কারণ হয়তো আছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ আছে। গত দশ বছরে ১৮৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। মাথাপিছু আয় ৩২০ ডলার থেকে ১৯০৯ ডলার হয়েছে। সেখানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভাগ এনবিআর কর্মকর্তাদের সহযোগিতার ঘাটতি ও পেশাগত অযোগ্যতা খুবই দৃশ্যমান। উদাহরণ হিসেবে বলতে চাই, আমদানি করা সিরামিকের কাঁচামালের মধ্যে ৩০ শতাংশ ময়েশ্চার থাকে। সেই ময়েশ্চারের ওপরও কর দিতে হয়। সম্পূরক শুল্ক বা এসডি দিতে হয়। অথচ এসডি আরোপ করা হয় দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য। এ ক্ষেত্রে এসডি অভ্যন্তরীণ শিল্পকে বাধাগ্রস্ত করছে। এ জন্যই হয়তো এনবিআর চেয়ারম্যান অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি।

রাজধানীর কুড়িলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় আজ তিন দিনের সিরামিক পণ্যের প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাংলাদেশ সিরামিক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতি এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের অনেক সম্মান করেন। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট ব্যবসা করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এটি বাংলাদেশের সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা মনে করে এফবিসিসিআই।

অর্থমন্ত্রীর বিষয়ে শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর ১১ মাস পর অর্থমন্ত্রী বললেন, সুদের হার এত বেশি যে, বাংলাদেশে ব্যবসা করা কঠিন। ব্যাংক খাতের পুনর্গঠনে এই ১১ মাস উনি কম করলেন? যখন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাপ আসে তখন তিনি বক্তব্য দিচ্ছেন। এটি দুঃখজনক।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১২/১৩ শতাংশ সুদ দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব না। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে রাজস্ব আদায়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও এনবিআরকে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সিরামিক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দিন প্রমুখ।