নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ছে, দামও কমছে

বাজারে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ছে। ফলে দামও কমছে। বিশেষ করে পাইকারি বাজারে বেশ কিছুটা কমেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম।

ঢাকার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি নতুন দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকা, চীনা পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিসরীয় পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা এবং মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

পাইকারি বাজারে দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমলেও খুচরায় ততটা কমেনি। ঢাকার ছোট খুচরা বাজার ও পাড়া-মহল্লার দোকানে প্রতি কেজি চীনা পেঁয়াজ এখনো ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মিসরীয় পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা এবং মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ১১০ থেকে ১৪০ টাকায়।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬০ থেকে ১৬০ টাকা। গত বছর এ সময়ে ছিল ২০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। এ হিসাবে দাম এখনো ৩০০ শতাংশ বেশি।

পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের নবীন ট্রেডার্সের মালিক নারায়ণ চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ফরিদপুর অঞ্চলে নতুন পেঁয়াজ উঠে গেছে। সরবরাহ বেশ ভালো। এটাই দাম কমার বড় কারণ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় চীনা ও মিসরীয় পেঁয়াজের কদর কমে গেছে। এ কারণে সেগুলোর দামও কম।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি দোকানে (৫ কেজি করে কেনা যায়) চীনা ও তুরস্কের পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। দেশি নতুন পেঁয়াজ বিক্রেতারা ৫০০ টাকা পাল্লা (৫ কেজি) চাইছিলেন, এতে প্রতি কেজি পড়ে ১০০ টাকা।

দেশের বাজারে গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়তির মধ্যে ছিল। ওই দিন ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির ন্যূনতম মূল্য প্রতি টন ৮৫০ ডলার বেঁধে দেয়। এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ভারত। এতে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১০০ টাকা ছাড়িয়েও থামছিল না। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ২৫০ টাকায় ওঠে। এরপর তা ২২০ থেকে ২৪০ টাকার মধ্যে ছিল। এর বাইরে অন্যান্য পেঁয়াজের কেজিও ১২০ টাকার ওপরে ছিল।

বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের বাজারও পড়তির দিকে। ভারতীয় পত্রিকা দ্য হিন্দুর বুধবারের এক প্রতিবেদন বলছে, দেশটির পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার মহারাষ্ট্রের লাসালগাঁওয়ে গত মঙ্গলবার পেঁয়াজের কেজি ৪৫ রুপিতে নেমেছে।

এদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম কমেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা কম। ফার্মের মুরগির লাল ডিম পাওয়া যাচ্ছে প্রতি ডজন (১২টি) ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। এ ক্ষেত্রে দর কমেছে পাঁচ টাকার মতো।

সবজির দামও কিছুটা কমেছে। নতুন আলু প্রতি কেজি ৪০-৫০, ফুলকপি প্রতিটি আকারভেদে ৩০ থেকে ৫০, বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩৫, শিম প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৬০, মুলা ৩০ থেকে ৪০ ও শালগম ৪০ টাকার মধ্যে কিনতে পারছেন ক্রেতারা।

অন্যান্য পণ্যের দামে তেমন কোনো হেরফের হয়নি।