শেয়ারবাজারের দুই 'ব্লু'

শেয়ারবাজার নিয়ে যত কম আলোচনা করা যায়, ততই ভালো। বাজারের যে অবস্থা, বিনিয়োগকারীরা বাজার ছেড়ে যেতে পারলেই যেন বাঁচেন। তাতে অবশ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কিছু যাবে আসবে কি না, এটাই প্রশ্ন। একটা বাজারে নানা ধরনের শেয়ার থাকে। বিনিয়োগকারীরা সেখান থেকেই বেছে নেন। সবারই আগ্রহ থাকে ভালো কোম্পানির শেয়ারের দিকে। কিন্তু দেশের শেয়ারবাজারে এখন যেন মুড়ি–মুড়কির এক দর। সব শেয়ারেরই এখন দুরবস্থা। বাজারের প্রতি সীমাহীন আস্থাহীনতার ফল এটি। এবার দেখা যাক ভালো বাজারের ভালো শেয়ার আর মন্দ শেয়ারবাজারের মন্দ শেয়ারের সংজ্ঞাটা কী। 

ব্লু চিপ শেয়ার: বাজারে এমন অনেক কোম্পানি আছে যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো, সুসংহত, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার মান ভালো। এরা অনেক দিন ধরে বাজারে প্রতিষ্ঠিত। তাদের দীর্ঘমেয়াদি ও স্থিতিশীল বৃদ্ধির রেকর্ড আছে। নিরাপদ কোম্পানি এবং নিয়মিত লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। সব মিলিয়ে বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় কোম্পানি। আর এসব কোম্পানিকেই শেয়ারবাজারে ব্লু চিপ কোম্পানি বলে, আর তাদের শেয়ার ব্লু চিপ শেয়ার। ভালো কোম্পানি বলে এই শেয়ারের চাহিদাও বেশি থাকে। এসব শেয়ার অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত। তবে একটা কথা বলে রাখা ভালো, শেয়ারবাজার কখনোই পুরোপুরি ঝুঁকিপূর্ণ নয়। শেয়ারবাজার মানেই ঝুঁকি। 

প্রশ্ন হলো, ভালো কোম্পানির শেয়ারের নাম ব্লু চিপ কেন হলো। এটা এসেছে পোকার খেলা থেকে। পোকারে বিজয়ীকে নীল রঙের যে চাকতি দেওয়া হয়, সেটি নগদ অর্থে রূপান্তর করলে সব সর্বোচ্চ পরিমাণে পাওয়া যায়। 

ব্লু স্কাই: বাংলায় বলা হয় অধিমূল্যের শেয়ার। এটা ফাটকা বাজারজাত শেয়ার। যে শেয়ারের বাজারদর অভিহিত দামের চেয়ে অনেক বেশি, তাকে বলা হয় ব্লু স্কাই শেয়ার। শেয়ারের দরের এ পার্থক্যটা বোঝাতেই এই নাম দেওয়া হয়েছে।

আগেই বলা হয়েছে শেয়ারবাজারের সব শেয়ারেরই কম–বেশি ঝুঁকি থাকে। কিন্তু কিছু শেয়ারের ক্ষেত্রে ঝুঁকি অনেক বেশি। ফাটকা বাজারিরা এসব শেয়ার ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। এদেরকেই বলে ব্লু স্কাই। যুক্তরাষ্ট্রে জোসেফ ম্যাককেন্না নামের একজন বিচারক প্রথম শেয়ারবাজার সংক্রান্ত এক মামলায় প্রথম এই শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। এরপর থেকেই ফাটকা বাজারজাত শেয়ারকে ব্লু স্কাই শেয়ার বলা হচ্ছে।