মেয়াদ বাড়ানোর পরও বিদায় দেওয়া হলো কমার্স ব্যাংকের এমডিকে

বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল খালেক খানের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল চলতি মাসেই। বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে অনুমোদনও দিয়েছিল। তবে নতুন মেয়াদে এক দিনও চেয়ারে বসার সুযোগ পেলেন না তিনি। নতুন করে কাজে যোগদানের সুযোগ না দিয়ে হঠাৎ করেই আবদুল খালেক খানকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানিয়ে দিয়েছে কমার্স ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, কমার্স ব্যাংকের এমডি আবদুল খালেক খানের চলতি মেয়াদের শেষ দিন ছিল আজ বৃহস্পতিবার। তবে চলতি মাসের শুরুতেই ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ তাঁর মেয়াদকাল বাড়িয়ে ৬৫ বছর পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সব যাচাই-বাছাই শেষে এতে অনুমোদনও দেয়। তবে আজ মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনই ব্যাংকটি তাঁকে হঠাৎ করেই বিদায় জানিয়ে দেয়।

হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তের কারণ জানতে যোগাযোগ করা হয় কমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান রশিদ আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবদুল খালেক খানকে আগে এক বছরের জন্য এমডি করা হয়েছিল। সেই মেয়াদ আজ শেষ হয়েছে। আমরা নতুন করে তাঁর মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে অনুমোদনও দিয়েছিল। তবে উনি যে কর্মদক্ষতা প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। তাঁর কারণে আমরা এই বছর বড় ধরনের লোকসানে পড়েছি, যা এই ব্যাংকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এত ক্ষতি আমাদের কখনোই হয়নি। একটি ব্যাংক তো এমন মানুষের হাতে ছেড়ে দেওয়া যায় না।’

তবে যে কর্মদক্ষতা প্রতিবেদনকে ভুয়া বলছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান, সেই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেই তাঁর এমডি পদের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যাচাই-বাছাই সক্ষমতা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে।

কী দেখে মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে রশিদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘ভেবেছিলাম তিনি অনেক কিছু দেখাতে পারবেন, কিন্তু পারেননি। হয়তো তিনি চেষ্টা করেছেন। সবচেয়ে বড় বিষয় তিনি কোনো ব্যবসাই করতে পারেননি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি, যেসব ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে, সেই টাকা ফেরত পাব। সার্চ কমিটি করা হবে। ভালো একজন এমডি খুঁজে বের করা হবে, যাতে ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে পারে।’

এ বিষয়ে আবদুল খালেক খানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কমার্স ব্যাংক সরকারি-বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত। এর ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের ও বাকিটা চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের হাতে।