ঢাকা-খুলনা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি চাই

>বিদায়ী ২০১৯–এর শুরুটা ভালো ছিল, শেষটা তেমন ভালো হলো না। শুরুতে ছিল অনেক প্রতিশ্রুতি, শেষটা ছিল অনেক ক্ষেত্রেই আশাভঙ্গের। কারণ, চাপের মুখে আছে অর্থনীতি। অর্থনীতির সঙ্গে যাঁরা নানাভাবে সম্পর্কিত, তাঁরা কীভাবে দেখছেন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে। কেমন গেল বিদায়ী বছরটি। অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো কী কী। তাহলে নতুন বছরে যাচ্ছি কী নিয়ে, প্রত্যাশাগুলো কী। ঠিক এই প্রশ্নগুলোই রাখা হয়েছিল দেশের বিশিষ্ট কয়েকজন অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে। তাঁরা অর্থনীতির মূল্যায়ন যেমন করেছেন, তেমনি বলেছেন কী তাঁরা চান, কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে অর্থনীতি।
কাজী আমিনুল হক
কাজী আমিনুল হক

কেমন গেল
২০১৯ সালে নতুন মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আইন কার্যকর হয়েছে। খুলনার ব্যবসায়ীরা এ নিয়ে খুব ভোগান্তিতে রয়েছেন। অনলাইনে ভ্যাট প্রদান সম্পর্কে বেশির ভাগ ব্যবসায়ীর ভালো ধারণা নেই। খুলনায় বাণিজ্যের প্রধান দুই খাত চিংড়ি ও পাট। ইতিমধ্যে পাটশিল্প ধ্বংস হতে চলেছে। পর্যাপ্ত চিংড়ি না পাওয়ায় এ খাতও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

চ্যালেঞ্জ
খুলনায় খুব বেশি ভারী শিল্প গড়ে উঠছে না। এর একমাত্র কারণ উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার অভাব। ঢাকা থেকে খুলনার দূরত্ব বেশি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা খুলনায় শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে খুব বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তা ছাড়া খুলনার স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাও শিল্পকারখানার জন্য চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংকঋণ পাচ্ছেন না। ব্যাংক আগে কিছু অসৎ ব্যবসায়ীকে ঋণ দিয়ে বিপাকে পড়েছিল। এ কারণে এখনকার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আগে বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়া বেশির ভাগ ব্যবসায়ী খেলাপি হয়েছেন।

চিংড়িশিল্পকে বাঁচাতে ‘ভেনামি’ চিংড়ি চাষ করা জরুরি। ওই চিংড়ির উৎপাদন অনেক বেশি, তুলনামূলক খরচও কম। অন্যদিকে পাটশিল্প রক্ষার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। আর তা না হলে ওই খাতের শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শুধু বসে বসেই মজুরি ও বেতন পাবেন। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওই খাতকেও এগিয়ে নিতে হবে।

তিন প্রত্যাশা
খুলনার উন্নয়নের জন্য সবার আগে প্রয়োজন ভ্যাট আইন সহজ করা ও প্যাকেজ ভ্যাট চালু করা। দ্বিতীয় প্রত্যাশা হলো, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি। বিমানবন্দর না থাকায় বিনিয়োগকারী ও বিদেশি ক্রেতারা খুলনায় আসতে চান না। তাই ২০২০ সালের মধ্যে খুলনায় খানজাহান আলী বিমানবন্দর চালু করা দরকার, যা খুলনার শিল্প উন্নয়নের পথকে সুগম করবে। খুলনার সঙ্গে ঢাকার সব সড়ক চার লেন করতে হবে। তাহলে যোগাযোগ সহজ হবে।

দীর্ঘদিনেও খুলনায় শিল্পের বিকাশ না হওয়ার আরেকটি কারণ গ্যাস না থাকা। ২০২০ সালের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ করা হলে খুলনার উন্নয়নের চিত্র পাল্টে যাবে। পদ্মা সেতু চালু হলে এসব সমস্যা খুলনার উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। তাই এগুলো আগে সমাধান করা জরুরি।

কাজী আমিনুল হক, সভাপতি, খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি