তৈরি পোশাক খাতে সংশোধন লাগবে

>বিদায়ী ২০১৯–এর শুরুটা ভালো ছিল, শেষটা তেমন ভালো হলো না। শুরুতে ছিল অনেক প্রতিশ্রুতি, শেষটা ছিল অনেক ক্ষেত্রেই আশাভঙ্গের। কারণ, চাপের মুখে আছে অর্থনীতি। অর্থনীতির সঙ্গে যাঁরা নানাভাবে সম্পর্কিত, তাঁরা কীভাবে দেখছেন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে। কেমন গেল বিদায়ী বছরটি। অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো কী কী। তাহলে নতুন বছরে যাচ্ছি কী নিয়ে, প্রত্যাশাগুলো কী। ঠিক এই প্রশ্নগুলোই রাখা হয়েছিল দেশের বিশিষ্ট কয়েকজন অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে। তাঁরা অর্থনীতির মূল্যায়ন যেমন করেছেন, তেমনি বলেছেন কী তাঁরা চান, কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে অর্থনীতি।
রুবানা হক
রুবানা হক

কেমন গেল
চলতি বছর ভালো যায়নি। কারণ, তৈরি পোশাক রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমে গেছে। সেটির জন্য দায়ী প্রতিযোগী দেশের তুলনায় ডলারের বিপরীতে আমাদের মুদ্রার (টাকার) মান শক্তিশালী রাখা। আমরা আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতার জায়গাটা হারিয়ে ফেলেছি। এটি ঠিক যে আমাদের পোশাকের দাম বাড়ছে। তবে ক্রয়াদেশ তো আসছে না। ক্রেতারা কিন্তু ঠিকই ক্রয়াদেশ দিচ্ছে। আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো ডলারের বিপরীতে তাদের মুদ্রার অবমূল্যায়নের সুযোগ কম দাম অফার করে সেসব নিয়ে যাচ্ছে। আমরা একটি সমীক্ষা করছি। সেটি হলে জানতে পারব দামের কারণে কোন পণ্য কোন দেশে চলে গেছে।

অক্টোবরে ২১ শতাংশ, নভেম্বরে ১২ শতাংশ এবং ডিসেম্বরের প্রথম ১৪ দিনে ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ পোশাক রপ্তানি কমে গেছে। হয়তো ডিসেম্বরে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে। মৌসুমের কারণে আগামী তিন-চার মাস হয়তো আমরা একটু ভালো করব। তবে তারপর সামগ্রিক অবস্থা বিচার করলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হলে পোশাক খাতে সংশোধন লাগবে। এই সংশোধনীর মধ্যে আমরা নীতি সহায়তার দাবি করি। সরকারের সবচেয়ে বড় জায়গা থেকে কোনো নির্দেশনা এলে সেটি কার্যকর করতে অনেক সময় লেগে যায়। আমরা আশা করি, নীতিনির্ধারকেরা ‘প্রো অ্যাকটিভ’ না হলেও ‘রিঅ্যাক্টিভ’ হবেন।

চ্যালেঞ্জ
প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে যাওয়ায় তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমে গেছে। ব্যাংকঋণের সুদের হার দুই অঙ্কের ঘরে। পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে উদ্যোক্তারা ব্যাপক অর্থ ব্যয় করলেও বাড়তি দাম পাচ্ছেন না। কর্মপরিবেশের কারণে ভাবমূর্তির উন্নয়ন কিছুটা হলেও ক্রয়াদেশ বৃদ্ধি পায়নি। 

তিন প্রত্যাশা
রপ্তানির খাতের দুরবস্থার বিষয়টি নীতিনির্ধারকেরা বুঝবেন এবং সে অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন। পণ্য রপ্তানিতে প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে পাল্লা দিতে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হবে। বৈশ্বিক ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য প্রস্তুত, মান নিশ্চিত ও টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উদ্যোগী হবেন।

রুবানা হক
সভাপতি
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)