বিশ্ববাজারে বাড়তেই বাংলাদেশেও এলপি গ্যাসের দাম বাড়ল

ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের শাখা আল কুদসের প্রধান কাশেম সোলাইমানি যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার পর থেকেই বিশ্ববাজারে তেল ও গ্যাসের দাম বেড়ে যায়। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। গতকাল ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।

তবে বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার পরদিনই বাংলাদেশে দাম বাড়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, আজ যদি কোনো বাংলাদেশি কোম্পানি বিশ্ববাজার থেকে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) কিনতে ঋণপত্র (এলসি) খোলে, তাহলে তা দেশে আসতে অন্তত এক মাস সময় লাগবে। কিন্তু দাম বাড়াতে এক দিনও সময় লাগল না।

এ বিষয়ে যমুনা এলপিজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলায়েত হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘আজ (শনিবার) থেকে বর্ধিত দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে সিলিন্ডারপ্রতি কত বেড়েছে, সে তথ্য আমি এখন বলতে পারছি না।’

এক দশক ধরে বেসরকারি এলপি গ্যাসের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি সরকার। বেসরকারি ব্যবসায়ীরা সরকারের সঙ্গে একাধিক আলোচনা করেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। সর্বশেষ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগ এলপি গ্যাসের মূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে সুপারিশ করেছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, সরকার চায় এলপিজির মূল্য নির্ধারণ করুক বিইআরসি। এ জন্য একটি সুপারিশ মন্ত্রণালয় থেকে যাচ্ছে বিইআরসিতে। এলপিজির মূল্য নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার প্রভাব পড়ার আগেই তারা দাম বাড়িয়ে দেবে।

>১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম গতকাল ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১০০ টাকায়

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান ছামসুর রহমান বলেন, ‘বিপিসির এলপিজির দাম বাড়েনি, আগের মতোই ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমনকি গত বাজেটে ২৫ টাকা কর বাড়ানোর পরও আমরা দাম বাড়াইনি।’

চাহিদা অনুযায়ী দেশে বার্ষিক ১৫ লাখ টনের বেশি এলপিজি দরকার। তবে আমদানি ও বিক্রি হচ্ছে বার্ষিক প্রায় ১০ লাখ টন। এর মধ্যে ২০ হাজার টন এলপিজি সরকারিভাবে বিক্রি হয়। অর্থাৎ বিপিসি মোট চাহিদার মাত্র ২ শতাংশ জোগান দেয়।

সরকারি প্রতিষ্ঠান এলপি গ্যাস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতি টন ১২৯ ডলার বেড়েছে। সর্বোচ্চ ১৩০ টাকা বাড়াতে পারে তারা। তা ছাড়া যদি এখনই এলসি করে এলপিজি আমদানির জন্য, সেটি আসতেও এক মাস লাগবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার ঘোষণা শুনে বাংলাদেশে এলপিজির দাম বাড়ার যৌক্তিকতা নেই। আবার যখন কমে তখন সে অনুযায়ী এলপিজির দাম তারা কমায় না। সরকারের নিয়ন্ত্রণ দরকার এখানে।