বিদেশি টেলকোর দেশি প্রধান

মোবাইল অপারেটর রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (িসইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ। ছবি: তানভীর আহমেদ
মোবাইল অপারেটর রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (িসইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ। ছবি: তানভীর আহমেদ

দেশে মুঠোফোনের যাত্রা শুরুর পর তিন দশক কেটে গেছে। এখন চার অপারেটরের তিনটিই বিদেশি, একটি সরকারি। একটি অপারেটর বন্ধও হয়ে গেছে। বাংলাদেশের মাটিতে বিদেশি অপারেটরদের এই দীর্ঘ যাত্রায় একমাত্র এদেশীয় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, যিনি এখন দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ অপারেটর রবি আজিয়াটার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মালয়েশিয়াভিত্তিক টেলিযোগাযোগ কোম্পানি আজিয়াটা বারহাদ এখন রবির সিংহভাগ শেয়ারের মালিক।

আমাদের আজকের ‘সিইওদের কথা’ মাহতাব উদ্দিন আহমেদকে নিয়ে। শুধু সিইও নন, রবিতে মাহতাব উদ্দিনের আরেকটি পদ আছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডি। অবশ্য পদের নাম যা-ই হোক, তাঁর পরিচয় তিনি এখন রবির নেতৃত্ব দেন।
বহুজাতিক খাদ্যপণ্য ও নিত্যব্যবহার্য পণ্যসামগ্রী বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক অথবা অন্য কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠানে সিইও বা সমপর্যায়ের পদে বাংলাদেশিরা সাফল্য দেখিয়েছেন। টেলিযোগাযোগ কোম্পানিতেও এদেশীয়দের যোগ্যতার প্রমাণ দিচ্ছেন বাংলাদেশি মাহতাব উদ্দিন। সাফল্যের স্বাক্ষরও রেখেছেন। বড় ধরনের লোকসানে থাকা রবি এখন লাভের মুখ দেখছে। ডিজিটাল জগতে নানাভাবে সেবা বাড়িয়ে ভবিষ্যতে বড় কিছুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মাহতাব উদ্দিন হিসাববিজ্ঞানের ছাত্র। তাঁর তো কোম্পানির টাকাপয়সার হিসাব রাখার কথা। কিন্তু কীভাবে তিনি আজকের অবস্থানে এলেন? কীভাবে তিনি টেলিযোগাযোগের মতো জটিল প্রযুক্তির একটি কোম্পানি সামলান, তা জানতে পুরো লেখা পড়ুন।

ঢাকা-করাচি-ঢাকা
মাহতাব উদ্দিনের জন্ম ঢাকায়, ১৯৬৬ সালে। তবে শৈশবের কয়েকটি বছর কেটেছে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের করাচিতে। বাবা ব্যাংকে চাকরি করতেন, বদলি হয়ে করাচি যেতে হয়। অবশ্য দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরুর আগে ১৯৭০ সালে মাহতাব উদ্দিনের বাবা বাদে পরিবারের বাকি সদস্যরা ঢাকায় ফিরে আসেন।
এখন শিশুদের প্রি-স্কুল, কেজি, নার্সারি ইত্যাদি পর্যায়ে পড়ানোর পর প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়, মাহতাব উদ্দিনের স্কুলজীবন শুরু হয়েছিল তৃতীয় শ্রেণি থেকে। এর কারণ ছিল দেশের মুক্তিযুদ্ধ। শুরুতে শিশু মাহতাবকে ভর্তি করা হয়েছিল মগবাজারের নজরুল একাডেমিতে। সেখানে এক–দেড় বছর রাখার পর ভর্তি করা হয় পুরান ঢাকার আহমেদ বাওয়ানী একাডেমিতে। পরিবারও পুরান ঢাকার কায়েতটুলীর বি কে গাঙ্গুলি লেনে থাকত, নানার বাড়িতে।

আহমেদ বাওয়ানী একাডেমি থেকে মাধ্যমিক পাস করার পর মাহতাব উদ্দিন ভর্তি হলেন নটর ডেম কলেজে। সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগে। পাশাপাশি তিনি দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশে (আইসিএমএ) সনদধারী হিসাববিদ্যাও পড়ছিলেন। সেই সময় এ সুযোগ ছিল, যা পরে বাদ দেওয়া হয়।

১৯৯০ সালের শেষ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আইসিএমএতে পড়া শেষ হয়। মাহতাব উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে (আইবিএ) ইভিনিং এমবিএতেও ভর্তি হয়েছিলেন। যদিও চট্টগ্রামে চাকরি নিয়ে চলে যাওয়ার কারণে তা আর শেষ করা হয়নি।

ব্যবসা আর করা হলো না
মাহতাব উদ্দিনের ইচ্ছা ছিল ব্যবসায়ী হওয়ার। কেন, সেটা নিজেই বলেন, ‘বাবাকে দেখেছি, সকালে ব্যাংকে যেতেন। রাতে ফিরতেন। তাঁর পরিবারকে দেওয়ার মতো সময় ছিল না। ফলে আমাকে চাকরি টানত না।’
মাহতাব উদ্দিনের পরিবারে কেউ ব্যবসায়ী ছিলেন না। তাঁর বাবাও চাইছিলেন বড় ছেলে ব্যবসায়ে নামুক। জমিও কিনে রেখেছিলেন। তখন বস্ত্র বা টেক্সটাইল কারখানা করার প্রবণতা চলছিল। ব্যবসা করার লক্ষ্য নিয়ে, ব্যবসা শিখতে মাহতাব উদ্দিন চাকরিতে ঢোকেন। শুরুতে আর্থিক বিষয়াদি আয়ত্তে আনতে যোগ দেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসিতে। পৌনে দুই বছর সেখানে কাজ করে যোগ দেন ইউনিলিভারে, ১৯৯৩ সালে। ইচ্ছা ছিল বিপণন ও উৎপাদন কৌশল শেখা। কিন্তু সেখানে গিয়ে ভালো কাজ করে একের পর এক পদোন্নতি পেলেন। ফলে ব্যবসা করার লক্ষ্যটি কিছুটা বিচ্যুত হয়।
ইচ্ছাটা পুরোপুরি বাদ দিতে হয় ১৯৯৯ সালে, বিয়ের পর। স্ত্রী শৈলী ফাতিমার শর্ত ছিল, তিনি কোনো ব্যবসায়ীকে বিয়ে করবেন না। মাহতাব উদ্দিনের আর ব্যবসায় নামা হলো না।

রবিতে যেভাবে
আইডিএলসি থেকে ব্যবস্থাপনা শিক্ষানবিশ হিসেবে ইউনিলিভারে যোগ দেন মাহতাব উদ্দিন। পদ ছিল অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট। ১৯৯৮ সালে পাকিস্তানে তাঁর পদায়ন হয়, কমার্শিয়াল ম্যানেজার পদে, আইসক্রিম বিভাগে।
মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘আমি পাকিস্তানে গিয়ে অনেক কিছু শিখলাম। ধরেন, আইসক্রিম। এটা যখন বিক্রি হয় তখন এর ৭০ শতাংশের মতো থাকে বাতাস। আমাদের টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোকে বলা হয় আমরা বাতাস বিক্রি করি। আইসক্রিমে যে বাতাস বিক্রি হয়, তা মানুষ দেখে না (হাসি)।’
কয়েক বছর পর ফাইন্যান্সিয়াল কন্ট্রোলার পদ নিয়ে ঢাকায় ফেরেন মাহতাব উদ্দিন। এরপর যান দুবাই। ইউনিলিভারেই। ২০০৬ সালে। আঞ্চলিক আটটি দেশ ছিল তাঁর আওতায়। পদ ছিল গ্রুপ ফাইন্যান্সিয়াল কন্ট্রোলার। মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘সেখানে আমি দেখেছি, গ্রুপের ব্যবসা কীভাবে দেখাশোনা করতে হয়। সেটা ছিল একটা বড় অভিজ্ঞতা।’

তিন বছর দুবাইয়ে থাকার পর মাহতাব উদ্দিন আবার ঢাকায় ফেরেন, ইউনিলিভারেই। নতুন পদ ন্যাশনাল ফাইন্যান্স ডিরেক্টর।

২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে মাহতাব উদ্দিন যোগ দেন রবিতে। পদ ছিল প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও)। তবে কেনাকাটাও দেখতে হতো। তখন রবির সিইও ছিলেন মাইকেল কুয়েনার। তিনি সিইও হতে মাহতাব উদ্দিনকে সহায়তা করেন। শেখার জন্য তাঁকে বিপণনও দেখতে বলেন।
মাহতাব উদ্দিন সিএফও হিসেবে ২০১০ সালে রবিতে যোগ দেন। ২০১৪ সালে চিফ অপারেটিং অফিসার বা সিওও হন। ২০১৬ সালে হন সিইও। শীর্ষ পদে যাওয়ার আগে অবশ্য তাঁকে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ার জন্য পাঠানো হয়। এ সুযোগ দেয় আজিয়াটা। কোর্স শেষ করার পর মালয়েশিয়ায় আজিয়াটায় ছয় মাস চাকরি করতে হয়। এ সময় আজিয়াটা নেপালের শীর্ষ অপারেটর এনসেলকে অধিগ্রহণ করে। মাহতাব এনসেল অধিগ্রহণে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। সেখান থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় রবি প্রথমবারের মতো বাঙালি একজনকে সিইও হিসেবে পাচ্ছে।

রবিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর
রবিতে মাহতাব উদ্দিন যখন দায়িত্ব নেন, তখন এয়ারটেলকে একীভূত করার জটিলতা চলছে। মাহতাব উদ্দিন বলেন, ২০১৫ সাল পর্যন্ত রবি বেশ ভালোই এগোচ্ছিল। তবে ২০১৬ সালে একীভূতকরণের বিলম্ব নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ভুগতে শুরু করে। বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধনের কারণে রবি বাজার হিস্যা হারায়। প্রচুর লোকসানও হয়, পরিমাণ ছিল সাড়ে ছয় শ কোটি টাকার বেশি। ১৯৯৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ওই বছরই ছিল ব্যবসায়িক দিক দিয়ে রবির সবচেয়ে খারাপ বছর।

মাহতাব উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলাম তিনি রবিকে কতটুকু এগিয়ে নিতে পেরেছেন। বলেন, ‘আমরা লাভে এসেছি। পরিমাণ যদিও কম। এর আগে একীভূতকরণ সফলভাবে শেষ করেছি। ফোর–জি (চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা) চালুতে রবি নেতৃত্ব দিয়েছে। সবার আগে ৬৪ জেলায় ফোর–জি চালু করেছে। আমি অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তি শক্ত করেছি।’

২০১৫ সালেও রবি লাভের মুখ দেখেছিল। মাঝের কয়েক বছর খারাপ যাওয়ার পর ২০১৮ সালে মুনাফা করেছে, হিসাব শেষে ২০১৯ সালেও মুনাফা হবে বলে আশা করছে। এখন অপারেটর বদলে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক আসছেন রবিতে।
এসব সাফল্যের জন্য নিজের নয়, কর্মীদের কৃতিত্ব দেন মাহতাব উদ্দিন। বলেন, ‘তাঁরা নানা ধরনের ব্যবসা ও সেবা নিয়ে আসছেন, যা কোম্পানিতে নতুন। কর্মীরা এখন বেশ উজ্জীবিত।’

বস্তাপচা অনুষ্ঠানও
মাহতাব উদ্দিনের তিন ছেলে। স্ত্রী ও ছেলেরা অস্ট্রেলিয়ায় থাকে। তবে ঢাকায় আসা-যাওয়া নিয়মিত। স্ত্রী শৈলী ফাতিমা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। বিয়ের পর আর সুযোগ হয়নি। তবে কয়েক বছর সাপ্তাহিক ইংরেজি পত্রিকা ফার্স্ট িনউজ–এ সহকারী সম্পাদক ছিলেন। মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘আমার জন্য এটা তাঁর ত্যাগ।’

মাহতাব উদ্দিন ঘুম থেকে ওঠেন খুব সকালে। নামাজ পড়ার পর মেইল খোলেন, জবাব দেন। এরপর কিছু সময় বিবিসি, আল–জাজিরায় বিশ্বের খবর নেন। এরপর ব্যায়ামাগারে গিয়ে ব্যায়াম শেষে ১০টার দিকে অফিসে যান। সারা দিন ব্যস্ততা থাকে। সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করার পর রাতে কোনো না কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হয়। বাসায় ফেরেন রাত ১০টা নাগাদ।

মাহতাব উদ্দিন বলেন, আগের মতো বই পড়ার সুেযাগ হয় না। স্ত্রী কোনো বইকে ভালো বললে সেটি পড়ে নেন। তবে ছাত্রজীবন থেকেই ফরচুন, হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ–এর মতো বিদেশি ব্যবসা-বাণিজ্যের ম্যাগাজিন পড়ার অভ্যাস রয়েছে। এখনো পড়েন। নিজেকে হালনাগাদ রাখেন। আবার কোনো অনুষ্ঠানে কোনো কিছু শোনার পর না বুঝলে ইন্টারনেটে বিস্তারিত পড়ে নেন।

সিনেমা দেখেন উড়োজাহাজে চলাচল করার সময়। বাসায় অনেক সময় হাস্যরসাত্মক অনুষ্ঠান দেখেন। বলেন, ‘হতে পারে অনেক বস্তাপচা অনুষ্ঠান। আমি টিভি ছেড়ে রাখি। আপনি হয়তো মনে করতে পারেন, মাহতাব ভাইয়ের মতো লোক এসব অনুষ্ঠান দেখে (আবার হাসি)!’

শেষ কথা
শুরুর দিকে মাহতাব উদ্দিন বলছিলেন, তিনি এক জায়গায় তিন–চার বছরের বেশি থাকেন না। কাজে যদি চ্যালেঞ্জ না থাকে, সেটাও তাঁর ভালো লাগে না। সিইও ও এমডি রবির শীর্ষ পদ। পেশাজীবনের সব চাওয়া-পাওয়া কি শেষ? জবাব, অবশ্যই না। তাহলে জীবনের আর অর্থ কী?

এখন ‘মোটিভেশন’ কী সেটাও তিনি উল্লেখ করেন, বলেন, ‘নিজের অর্জিত অভিজ্ঞতা, জ্ঞান দিয়ে সমাজের জন্য, দেশের জন্য যদি কিছু করা যায়, সেই চেষ্টাই আমি করব। এখানে আর্থিক কোনো বিষয় নেই। এ জন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে, কোনো সেমিনারে আমাকে ডাকলে আমি চলে যাই, যদি হাতে সময় থাকে।’
মাহতাব উদ্দিন চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেন। টেলিযোগাযোগ খাতে এখন চ্যালেঞ্জের কোনো ঘাটতি নেই। নিরীক্ষা থেকে পাওনা নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির সঙ্গে বিরোধ চলছে। চলতি বাজেটে নতুন করে কর আরোপ করা হয়েছে। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে সরঞ্জাম আমদানি বন্ধ, আরও অনেক কিছু।

মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘এ দেশে টেলিযোগাযোগ খাত বিপুল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। কিন্তু একটি অপারেটর ছাড়া বাকিরা তেমন কোনো বিনিয়োগ রিটার্ন পাচ্ছে না। এটা তাদের জন্য হতাশাজনক। এটা অংশীজনেরা তেমন মূল্যায়ন করছে বলে আমার মনে হয় না। ভবিষ্যতের জন্য এটা ভালো নয়।’ তিনি বলেন, ‘তবে আমি খুবই আশাবাদী যে সরকার এবং টেলিযোগােযাগ িনয়ন্ত্রক সংস্থার সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে আমরা যেতে পারব।’

মাহতাব উদ্দিন আহমেদের ৬ পরামর্শ
টেলিযোগাযোগে কাজ করতে
টেলিযোগাযোগ কোম্পানিতে কাজ করতে হলে ডিজিটাল মানসিকতা থাকতে হবে। দূরদর্শী হতে হবে। রবি শুধু একাডেমিক ফলাফল দেখে জনবল নেয় না। মূল বিবেচ্য বিষয় থাকে, তার ডিজিটাল জ্ঞান কতটুকু। দূরদর্শী না হলে ভবিষ্যতে কী চাহিদা তৈরি হবে, তা বুঝতে পারবে না।

পেছনে তাকিয়ে সামনে নয়
ঝুঁকি নিতে জানতে হবে। কোনো ক্ষেত্রে আগের সাফল্য দেখে পদক্ষেপ নেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। নতুন নতুন বিষয় পরীক্ষা করতে হবে। কয়েকটি বিফল হলেও দু-একটি সফল হবে।

শিক্ষায় ঘাটতি কোথায়
বিশ্ববিদ্যালয়ে যা পড়ানো হয়, তা সন্তোষজনক নয়। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে মানুষের কর্মসংস্থান কমে যাবে, এটা ঠিক নয়। বরং দক্ষতার ধারণা বদলে যাবে। যেমন ডেটা সায়েন্স উন্নত বিশ্বে পড়ানো হচ্ছে। বাংলাদেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভবত নেই।

শিক্ষার্থীদের জন্য
বিশ্ববিদ্যালয়ে যা-ই পড়ানো হোক, নিজে পড়তে হবে। ইন্টারনেটের যুগে জ্ঞান হাতের মুঠোয়। অ্যানালিটিকস, ব্লক চেইন, আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস), এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)—এসব তাঁদের জানতে হবে, যে বিষয়ের শিক্ষার্থী হোন না কেন।

বাংলাদেশিরা পিছিয়ে নেই
যেসব বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশিদের সিইও পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা খারাপ করেননি। দেশিরা বরং বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা বুঝে প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে পারেন। দেশিদের দক্ষতা-যোগ্যতায় কোনো ঘাটতি নেই।

অপার সম্ভাবনা
প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এখন অনেক নতুন নতুন স্টার্টআপ কোম্পানি হচ্ছে। তাই পড়ালেখা শেষ করে শুধু চাকরি নয়, তরুণেরা চাইলে উদ্যোক্তা হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে রবিও তরুণদের নানা আয়োজনের মাধ্যমে সহায়তা করছে।