ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজারে আধঘণ্টায় সূচক বেড়েছে ৩৫ পয়েন্ট

সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আজও অব্যাহত দেশের শেয়ারবাজারে। একেবারে তলানিতে নেমে আসার পর অবশেষে গতকাল বুধবার সূচক কিছুটা বাড়ে। আজ বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সকাল সাড়ে ১০টায় লেনদেন শুরুর পর প্রথম আধা ঘণ্টায় দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩৫ পয়েন্ট। এ সময় লেনদেনের পরিমাণ ৩১ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই প্রথম আধা ঘণ্টায় বেড়েছে ৪৩ পয়েন্ট। গতকাল সূচকটি বেড়েছে ৯৮ পয়েন্ট।

ডিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় হাতবদল হওয়া শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৫টির, কমেছে ৩৫টির আর দর অপরিবর্তিত আছে ৩৫টির।

গতকাল সূচক বাড়ার পর বাজারসংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে গতকাল সরকারি কয়েকটি ব্যাংক শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসে। পাশাপাশি আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীদের আগ্রাসী বিক্রি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তাতে বুধবার লেনদেনের শুরু থেকে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। লেনদেন শুরুর প্রথম ৩০ মিনিটেই ডিএসইএক্স সূচকটি ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অবশ্য লেনদেনের শেষ ভাগে এসে সেই উত্থান আর ধরে রাখতে পারেনি সূচকটি। ফলে ৩২ পয়েন্টে এসে শেষ হয় ডিএসইএক্স সূচকের গতকালের উত্থান কাহিনি।

বাজার পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল লেনদেন শুরুর আগেই শীর্ষ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহী, ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন বা ডিবিএ ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) নেতাদের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা বৈঠক করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বৈঠকে বিএসইসির পক্ষ থেকে সবার কাছে পতনের কারণ ও সংকট উত্তরণে করণীয় বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।

এ সময় ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা বাজারের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, বাজারে বিভিন্ন সময় নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো বছরের পর বছর আর্থিক প্রতিবেদনে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার পরও সেসব আর্থিক প্রতিবেদনের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। আবার বন্ধ কোম্পানির শেয়ার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার পর সেগুলো কাদের পত্রকোষ বা পোর্টফোলিওতে গিয়ে জমা হয়, তা কখনো খতিয়ে দেখেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তালিকাভুক্তির কয়েক বছর না যেতেই কেন কোম্পানিগুলো খারাপ হয়ে যাচ্ছে, তা জানারও কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে বাজার থেকে টাকা তুলে নেওয়ার পর সেসব টাকার জন্য কোম্পানিগুলোকে কোনো ধরনের জবাবদিহি করতে হচ্ছে না। এসব কারণে দিনে দিনে শেয়ারবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।