চালের দামও বাড়ল

বাজারে কয়েক ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি ২ টাকার মতো বেড়েছে। বড় বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে সরু মিনিকেট চাল, মাঝারি চাল ও মোটা চালের দাম বাড়ে। মূলত বোরো মৌসুমের চালের দাম বাড়তি, যার জোগান এখন শেষ দিকে।

নতুন বছরের শুরুতে বাজারে ভোজ্যতেল, চিনি ও ডালের দাম বেড়েছে। পেঁয়াজের দাম এখনো চড়া। রসুন, আদা ও মসলার দামও বেশি। এর মধ্যেই চালের দামে কিছুটা বাড়তির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা অনুযায়ী, এক সপ্তাহ আগে সরু চালের কেজি ৪৫ থেকে ৬০ টাকা ছিল, এখন সেটা ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এর মানে হলো তুলনামূলক কম দামি সরু চাল কেজিতে ৫ টাকা বাড়তি। অন্যদিকে মাঝারি চাল প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা ছিল, যা এখন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

বাবুবাজার-বাদামতলী, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, কারওয়ান বাজার, কুষ্টিয়ার মিল পর্যায় পর্যন্ত গত দুই দিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাইকারি বাজারে এখন সরু মিনিকেট চাল ৪৪ থেকে ৪৭ টাকা, মাঝারি বিআর-২৮ জাতীয় চাল ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা ও মোটা চাল ২৮ থেকে ৩২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল কিছুদিন আগে প্রতি কেজি ২৬ টাকায় নেমেছিল, সেটা এখন ২ টাকা বেড়ে ২৮ টাকা হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৪৮ থেকে ৫৪ টাকা, মাঝারি বিআর-২৮ জাতীয় চাল মানভেদে ৩৮ থেকে ৪৪ টাকা ও মোটা চাল মানভেদে ৩২ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে সব দোকানে এখনো বাড়তি দামের চাল পৌঁছায়নি বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের আড়ত মেসার্স খুলনা রাইস এজেন্সির মালিক শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আমন মৌসুমে যেসব চাল বাজারে এসেছে, তার দামে তেমন একটা হেরফের হয়নি। বাড়তি মূলত বোরো মৌসুমের চাল, যেটা শেষের দিকে।

>

ভোজ্যতেল, চিনি ও ডালের বাড়তি দামের মধ্যে যোগ হলো চাল। বাড়তি মূলত বোরো মৌসুমের চালের দাম।

আমন মৌসুমে সরু চালের মধ্যে নাজিরশাইল বাজারে আসে। এ চালের দাম সব সময় মিনিকেটের চেয়ে বেশি হয়। বাজারে মানভেদে নাজিরশাইল চাল ৪৮ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। নাজিরশাইল ছাড়া মোটা চালের কয়েকটি জাতও আমনে ওঠে।

এর আগে গত নভেম্বর মাসের শেষ দিকে চালের দাম কেজিতে মানভেদে ২ থেকে ৭ টাকা বেড়ে গিয়েছিল। তখন প্রতি কেজি ৪৩ থেকে ৪৪ টাকার সরু মিনিকেট চালের দাম ৫০ টাকার আশপাশে উঠে যায়। আর বিআর-২৮ জাতের চালের দাম ওঠে ৩৬ থেকে ৪০ টাকায়। আর মোটা চাল ৩২ থেকে ৩৪ টাকায় বিক্রি হয় খুচরা বাজারে। এরপর ডিসেম্বরের শেষ দিকে মোটা চাল ও মাঝারি চালের দাম কিছুটা কমে গিয়েছিল।

বাজারে এক সপ্তাহে আরও বেড়েছে খোলা সয়াবিন তেলের দাম। খুচরা বাজারে এক লিটার খোলা সয়াবিন তেল ৯৫ থেকে ৯৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাসে ১০ টাকার মতো বাড়তি। পাম তেল প্রতি লিটার ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দুই মাসে এই তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ২০ টাকার মতো। অবশ্য এক সপ্তাহে নতুন করে বাড়েনি।

নতুন বছরের শুরুতে চিনির দাম কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়ে খোলা চিনি ৬৫ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ৭২ টাকায় উঠেছে। একইভাবে মোটা দানার মসুর ডালের দাম প্রতি কেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় উঠেছে, যা আগের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা বাড়তি। অ্যাংকর ডাল বিক্রেতারা ৪৫ টাকার আশপাশের দামে বিক্রি করছেন। এটা ৩ থেকে ৫ টাকা বাড়তি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

দেশি পেঁয়াজের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় নেমেছে। বিদেশি বড় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। বছরের এ সময়টায় সাধারণত পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকার মধ্যে থাকে। চীনা রসুনের কেজি এখন ১৫০ টাকা, দেশি রসুন ২০০ টাকা। আদা পাওয়া যাচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়।

সবজির দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি সবজি পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। ফুলকপি ও টমেটোর দামটা শুধু কমছে না। মাঝারি আকারের একটি ফুলকপি ৪০ টাকার মতো চাইছেন বিক্রেতারা। টমেটোর কেজি হাঁকা হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা।