কর্মসংস্থানে পিছিয়ে পড়েছে ভারত

দক্ষিণ এশিয়ায়ও কাজের সুযোগ তৈরিতে পিছিয়ে পড়েছে ভারত। ছবি: রয়টার্স
দক্ষিণ এশিয়ায়ও কাজের সুযোগ তৈরিতে পিছিয়ে পড়েছে ভারত। ছবি: রয়টার্স
>■ রিজার্ভ ব্যাংক টানা সুদ কমালেও চাহিদা চাঙা হয়নি।
■ কর্মসংস্থান কমেছে বলে চাহিদা বাড়ছে না।


অর্থনীতি ভালো যাচ্ছে না ভারতের। চারদিকেই দুঃসংবাদ—রাজস্ব আদায় হচ্ছে না, শিল্পোৎপাদন কম, গাড়ি বিক্রিতে ভাটা, খুচরা বিক্রি কম ইত্যাদি। কর্মসংস্থান হচ্ছে না। অথচ বিপুল কর্মসংস্থানসহ ভালো দিনের প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিল নরেন্দ্র মোদির সরকার। ভারতের দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ও ইকোনমিক টাইমস পত্রিকা সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে। 

এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানা গেল, পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে উন্নত দুনিয়ার সঙ্গে তুলনা তো দূরের কথা, দক্ষিণ এশিয়ায়ও কাজের সুযোগ তৈরিতে পিছিয়ে পড়েছে ভারত। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও এমনকি আফগানিস্তান, পাকিস্তানের মতো দেশে জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ (প্রায় ৩৩ শতাংশ) শিক্ষা, কাজ বা কোনো প্রশিক্ষণে যুক্ত নয়। অথচ ভারতে সেই হার ৪০ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ প্রতি পাঁচজনে দুজন আক্ষরিক অর্থেই বেকার। সম্প্রতি কাজের বাজারের এমন বিপন্ন ছবি ফুটে উঠেছে ভারত সরকারের পরিসংখ্যানেও। এনএসএসও রিপোর্ট জানিয়েছে, বেকারত্ব ৪৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। 

বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান ছবি এবং আগামী বছরে তার সম্ভাবনা নিয়ে গত শুক্রবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের আর্থিক ও সামাজিক বিষয়ক বিভাগ। ভারতের অর্থনীতির বিবর্ণ ছবি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে। টানা ছয়টি ত্রৈমাসিকে ভারতের প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী। 

প্রতিবেদনে উঠে আসা নানা সমস্যা উল্লেখ করে জাতিসংঘের আর্থিক ও সামাজিক কমিশনের (দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া) প্রধান নাগেশ কুমার বলেন, শ্লথ বিশ্ব অর্থনীতির ছায়া থেকে নিজেদের দেশকে বের করতে ২০১৯ সালে সুদ কমিয়েছে ৬৪টি শীর্ষ ব্যাংক। কিন্তু এতে বিশেষ লাভ হয়নি। ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়। রিজার্ভ ব্যাংক টানা সুদ কমালেও চাহিদা চাঙা হয়নি। হাল ফেরেনি অর্থনীতির। এ জন্য অবকাঠামো ও শিক্ষার মতো ক্ষেত্রে বিপুল সরকারি বিনিয়োগ প্রয়োজন। এতে ঘাটতির লক্ষ্য আপাতত শিথিল করতে হলেও আপত্তি থাকার কথা নয়।

নাগেশ কুমারের যুক্তি, প্রবৃদ্ধি চাঙা হলে কর আদায় বাড়বে। সঙ্গে আকারেও বড় হবে অর্থনীতি। আর এই দুইয়ের প্রভাবে কমতে শুরু করবে জিডিপির সাপেক্ষে ঘাটতির অনুপাতও। তবে মোদি সরকার সম্প্রতি অবকাঠামো খাতে বিপুল বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।