কিস্তিতে ৫৭৫ কোটি টাকা দিতে চায় গ্রামীণফোন

সরঞ্জাম আমদানি ও প্যাকেজের ওপর নিষেধাজ্ঞা কাটাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) পাওনা দাবির একটি অংশ দিতে রাজি মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন। তবে সেটা ২ হাজার কোটি টাকা নয়। গ্রামীণফোনের অনুরোধ, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ অঙ্কটি কমিয়ে ৫৭৫ কোটি টাকা করবেন এবং পরিশোধের জন্য ১২টি কিস্তির সুবিধা দেবেন।

এ দুই দাবি নিয়ে গতকাল রোববার আপিল বিভাগের কাছে একটি রিভিউ আবেদন করেছে গ্রামীণফোন। আপিল বিভাগই গত ২৪ নভেম্বর বিটিআরসির দাবি করা ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে গ্রামীণফোনকে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে বলেছিলেন।

রায়ে বলা হয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে গ্রামীণফোন এ টাকা দিলে বিটিআরসির নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে হাইকোর্টের যে নির্দেশ রয়েছে, তা বহাল থাকবে। এর মানে হলো, গ্রামীণফোন সরঞ্জাম আমদানির সুযোগ পাবে।

আরেক অপারেটর রবি আজিয়াটা ১৩ জানুয়ারি ২৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা জমা দিয়ে সরঞ্জাম আমদানি ও প্যাকেজের ওপর নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেয়েছে। তাদের হাইকোর্ট ১৩৮ কোটি টাকা পরিশোধ করতে বলেছিলেন। গ্রামীণফোনও এই প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে টাকা দেওয়ার আগ্রহের কথা জানাল।

অবশ্য নিরীক্ষা সঠিক না বেঠিক, তা নিয়ে বিরোধ থাকছেই। দুই অপারেটরই এখনো নিরীক্ষাকে সঠিক নয় বলে উল্লেখ করছে। গতকালও গ্রামীণফোনের পরিচালক ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত রিভিউ আবেদনের কথা জানিয়ে যে বিবৃতি দেন, তাতে নিরীক্ষাকে ত্রুটিপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়। 

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হোসেন সাদাত বলেন, ‘রাজস্বের ক্ষেত্রে কোনো বিরোধ নিয়ে আপিল করতে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ অর্থ আগাম জমা দিতে হয়। এই নীতি অনুযায়ী আমরা ২৫ শতাংশের কথা বলেছি।’

রাজস্বের ভাগাভাগি, কর ও অন্যান্য খাতে গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসি যে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দাবি করছে, তার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ৪ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। বিটিআরসির পাওনা দাবির ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকার মধ্যে মূল অঙ্ক ২ হাজার ২৯৯ কোটি। বাকিটা ১৫ শতাংশ হারে চক্রবৃদ্ধি সুদ।

গ্রামীণফোনের টাকা জমা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারা দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েছে। এই শ্রদ্ধাবোধ বজায় থাকুক, সেটা আমরা চাই।’

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নিরীক্ষা নিয়ে সরকার আলোচনার মধ্যেই ছিল। আদালতে গেছে গ্রামীণফোন। আদালতের সিদ্ধান্ত আসার পর আলোচনা শুরুর বিষয়ে চিন্তা করা যাবে।