ইইউ-ভিয়েতনাম বাণিজ্য চুক্তির অনুমোদন

ভিয়েতনামের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকেরা। ছবি: সংগৃহীত
ভিয়েতনামের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকেরা। ছবি: সংগৃহীত

মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ সত্ত্বেও ভিয়েতনাম ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপের পার্লামেন্ট। এতে আগামী ১০ বছর প্রায় বিনা শুল্কসুবিধা পাবে ভিয়েতনাম। ইইউর প্রভাবশালী সংসদীয় বাণিজ্য কমিটি গত মাসে এই চুক্তির পক্ষে সুপারিশ করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে এই চুক্তি অনুমোদন পায়।

মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিটি ইইউর সঙ্গে ভিয়েতনামের ৯৯ শতাংশ কাস্টমস শুল্ক দূর করবে এবং গাড়ি ও ওষুধের মতো পণ্যগুলোর মানদণ্ড সমন্বিত করার মাধ্যমে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করবে। একই সঙ্গে ইউরোপ ও ভিয়েতনাম—উভয় পক্ষের কোম্পানিগুলোর জন্য বাজার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করবে। ইইউর হিসাবে, বাণিজ্য চুক্তিটির ফলে ২০৩৫ সাল নাগাদ ভিয়েতনামের জন্য ইইউতে বার্ষিক ১ হাজার ৫০০ কোটি ইউরো (১ হাজার ৬৬০ কোটি ডলার) অতিরিক্ত রপ্তানি সম্ভব হবে। অন্যদিকে, ভিয়েতনামেও ইইউর রপ্তানি ৮ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে বার্ষিক ২২ বিলিয়ন ইউরোতে পৌঁছাবে।

ভিয়েতনাম মূলত ইউরোপে টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি, খাদ্য ও তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। অন্যদিকে, ইইউর দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোয় রপ্তানির তালিকায় রয়েছে যন্ত্রপাতি, পরিবহন সরঞ্জাম, রাসায়নিক ও কৃষিপণ্য।

ইইউর সংসদীয় কমিটির সদস্য গ্রিট বুর্জেওস বলেন, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে এই চুক্তি ভিয়েতনামের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবে।

তবে বরাবরই এই চুক্তির বিরোধিতা করে আসছিল এনজিওগুলো। এর আগে ২৮টি এনজিওর একটি গ্রুপ ইইউর আইনপ্রণেতাদের কাছে বলেন, শ্রম ও মানবাধিকার রক্ষায় ভিয়েতনাম প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই চুক্তিতে তাদের সম্মতি স্থগিত করা উচিত। তবে গতকাল পার্লামেন্টে তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের সমর্থন ছিল এই চুক্তিতে। আইনজীবীদের দ্বারা গৃহীত হওয়ার পর এখন এই চুক্তি ইইউ কাউন্সিলের দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে। এরপর ২৭ সদস্যদেশে অনুমোদিত হতে হবে।

গতকাল মানবাধিকার ইস্যুতে কম্বোডিয়ার বাণিজ্যসুবিধা কমিয়ে দিয়েছে ইইউ। তাঁরা বলেছে, কম্বোডিয়াকে দেওয়া বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা (জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রিফারেন্সেস-জিএসপি) আংশিক স্থগিত করা হবে। ফলে, ইউতে কম্বোডিয়ার ২০ শতাংশ রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গণতন্ত্র নষ্ট হচ্ছে, মানবাধিকার নষ্ট হচ্ছে—এমন কিছুর পাশে ইইউ দাঁড়াবে না।

এ বিষয়ে কম্বোডিয়ার শক্তিশালী বিরোধীদলীয় নেতা হুন সেন বলেন, ‘ইইউর সমালোচনার মুখে এই দেশ মাথা নত করবে না।’