ট্রাম্পের কাজে এক, মুখে আরেক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এমন সব নীতি এড়াতে চান, যা বিভিন্ন দেশের যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করতে ঝামেলা পাকায়। যদিও তাঁর প্রশাসন ঠিক উল্টো কাজটিই করে আসছে। তবে ট্রাম্প এখন সেসব নীতি এড়ানোর চিন্তাভাবনা করছেন। গতকাল মঙ্গলবার এক টুইটবার্তায় এ কথা জানান তিনি।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত তিন বছরে কোটি কোটি ডলার পণ্য আমদানিতে শুল্ক বসিয়েছেন ট্রাম্প। বাণিজ্যদ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে। হঠাৎ গতকালের ওই দীর্ঘ টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি চাই না আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করা অসম্ভব হোক। কারণ এর অর্থ দাঁড়ায়, এগুলো অন্যত্র চলে যাবে। যুক্তরাষ্ট্র এমন ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে পরিণত হতে চায় না, যেখান থেকে পণ্য কিনতে গিয়ে অন্য দেশকে সমস্যায় পড়তে হবে।’

বিশ্বব্যাপী ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। জাতীয় সুরক্ষা হুমকিতে বলে দোহাই দিয়ে তিনি এ কাজ করছেন। এমনকি ইউরোপ থেকে আসা গাড়ির ক্ষেত্রেও একই রকম করার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর এ বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল দ্বন্দ্ব হয়েছে চীনের সঙ্গে। ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা প্রায় ১০০ শতাংশ পণ্যের ওপর আমদানির শুল্ক আরোপ করার ঘোষণা করেছিলেন। অবশ্য চলতি বছরের জানুয়ারিতে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি সাক্ষরের মাধ্যমে কিছু কিছু পণ্যের ওপর শুল্কারোপ স্থগিত করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগই তার জায়গায় রয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপে দেশটির ব্যবসায়িক সহযোগীরাও বসে থাকেনি। তারাও কার্বন, মোটরসাইকেল ও খামারজাত মার্কিন পণ্যে পাল্টা শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করে। ক্ষতি পোষাতে নিজেদের খামারিদের কয়েক কোটি ডলার ভর্তুকি দিতে বাধ্য হয় মার্কিন সরকার।

উড়োজাহাজ কোম্পানি এয়ারবাসকে ভর্তুকি দেয় ইউরোপীয় সরকার। এ নিয়ে ১৫ বছর ধরে চলা মামলার জেরে সম্প্রতি বেশ কিছু পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্কারোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে রয়েছে স্কচ হুইস্কি, ফরাসি ও স্প্যানিশ ওয়াইন এবং ইংল্যান্ডের পনির। এ ছাড়া ডিজিটাল কর আরোপের জেরে ফরাসি পণ্যে পাল্টা শুল্কারোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে কাজে এগুলো করলেও মুখে এখন ভিন্ন সুর তুলেছেন ট্রাম্প।

২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো ভারত সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প। সফরের বিষয়ে ট্রাম্প বলেছেন, দেশটির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেনশিয়াল নির্বাচনের আগে কোনো চুক্তি সম্পন্ন হবে কি না, তা নিয়ে তিনি নিজেও নিশ্চিত নন। গতকাল মেরিল্যান্ডে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য চুক্তি হতেই পারে, তবে বড় ধরনের চুক্তি আমি ভবিষ্যতের জন্য রেখে দিয়েছি।’