শিকড়ের টানে বর্ণালংকারে সাজানো অ্যালবাম 'আমার বর্ণ আমার গর্ব'

বর্ণালঙ্কারে সাজানো হয়েছে অ্যালবাম ‘আমার বর্ণ, আমার গর্ব’। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
বর্ণালঙ্কারে সাজানো হয়েছে অ্যালবাম ‘আমার বর্ণ, আমার গর্ব’। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বছর ঘুরে আসা ফেব্রুয়ারিও চলে যাচ্ছে। ভাষার জন্য আমাদের মন কেঁদে কেঁদে ওঠে প্রতিনিয়ত। বাংলা ভাষাকে আমরা ভালোবাসি। কিন্তু ভাষার মর্যাদা রক্ষায় আমরা প্রকৃতপক্ষে কতটুকু সফল হতে পেরেছি! কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ লিখে গেছেন, ‘আগে চাই বাংলা ভাষার গাঁথুনি, পরে ইংরেজি শেখার পত্তন’। কিন্তু দেশের বর্তমান পটচিত্র একেবারেই অন্য রকম। বাংলা নয়, বরং আমরা ইংরেজি ভাষা শিখতে এবং সন্তানদের শেখাতে আদা-জল খেয়ে নেমে পড়েছি মাঠে। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার অজুহাতে আমরা আমাদের সন্তানকে ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে পড়াতে চাই। এসব স্কুলে পড়া ছোট ছোট শিশুর মুখে অনর্গল ইংরেজি বলা আমাদের মুগ্ধ করে, তাদের অভিভাবক হিসেবে গর্বিত করে। আবার টিভি কার্টুন দেখে হিন্দি ভাষা শেখা তো আছেই। কিন্তু তাদের সঠিক বাংলা বলতে না পারাটা কি দুঃখ দেয় না! আমাদের এমন অনুশীলনে দিনে দিনে শিশুরা বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সাহিত্যকে প্রায় ভুলতে বসেছে।

মায়ের ভাষা আর মাটির ঐতিহ্যকে ভুলতে না দেওয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘিরে বাংলা ভাষার বর্ণালংকার দিয়ে একটি অ্যালবাম সাজিয়েছে ক্লেমন। ক্লেমনের ফেসবুক পেজে শেয়ার করা ‘আমার বর্ণ আমার গর্ব’ নাম দিয়ে সাজানো এই অ্যালবামে ক্লিক করে বাংলার স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব, সাহিত্য, জায়গা বা বিষয়ের সঙ্গে মিলিয়ে বাংলা ভাষার প্রতিটি বর্ণের সঙ্গে আরও একবার পরিচিত হয়ে নেওয়া যায়। অ্যালবামটিতে বাংলা ভাষার প্রতিটি বর্ণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের সাহিত্য, ইতিহাস, ঐতিহ্য, দর্শনীয় স্থান, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব এবং নিয়মিত ব্যবহার্য কিছু শব্দ।

ক্লেমনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলা বর্ণমালার প্রতিটি অক্ষর আর তার সঙ্গে মিশে থাকা বাঙালিয়ানার ঐতিহ্য সবাইকে মনে করিয়ে দিতেই এমন আয়োজন। বাংলা ভাষার ৫০টি বর্ণ দিয়ে নতুন করে ৫০টি শব্দে তৈরি করা হয়েছে সমৃদ্ধ একটি অ্যালবাম। এই অ্যালবামে ৭টি দর্শনীয় স্থান, যেমন: চ-তে চলনবিল, ঢ-তে ঢাকেশ্বরী; ১৪ জন ব্যক্তিত্ব, যেমন: আ-তে আব্দুস সালাম, ঈ-তে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ক-তে কাজী নজরুল ইসলাম; ৬টি সাহিত্য, যেমন: ঐ-তে ঐকতান, স-তে সংশপ্তক, গ-তে গীতাঞ্জলি; ২টি ইতিহাসের সাক্ষ্য বহনকারী প্রতীক, যেমন: অ-তে অপরাজেয় বাংলা, ঊ-তে ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান; ১২টি ঐতিহ্যের নাম, যেমন: ই-তে ইলিশ, এ-তে একতারা এবং ৯টি নিয়মিত ব্যবহৃত এমন শব্দ, যেমন: ঋ-তে ঋতু, ঠ-তে ঠেলাগাড়ি ইত্যাদি সব মিলিয়ে ৫০টি বর্ণ। এই লিংকে (https://www.facebook.com/clemoncleardrink/) বিস্তারিত পাওয়া যাবে।

আয়োজনটি সম্পর্কে আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম, যেন বাংলার ঐতিহ্য আর ইতিহাস ভুলে না যায়, সে লক্ষ্যেই ক্লেমনের এই প্রয়াস। বাংলার ভাষার সব বর্ণমালার ব্যবহারের মাধ্যমে গঠিত আমরা দেশের সাহিত্য, ইতিহাস, ঐতিহ্য, দর্শনীয় স্থান, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব এবং নিয়মিত ব্যবহার্য ৫০টি শব্দ দিয়ে শিকড়ের সঙ্গে আরেকবার পরিচিত হতে পারবে।’