ঘরে বসেই টিআইএন

ঘরে বসেই আপনি ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নিতে পারবেন। এ জন্য কর কার্যালয়ে যেতে হবে না। কোনো হয়রানি হতে হবে না। আপনি অনলাইনেই ফরম পূরণ করে জমা দেবেন, স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-মেইলে ই-টিআইএন পেয়ে যাবেন। এ জন্য আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে। থাকতে হবে নিজের নামে মুঠোফোন। 

তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের কারণে সবকিছু এখন হাতের মুঠোয়। ইন্টারনেটের কারণে সব কাজ হয়ে যায় মুহূর্তেই। 

কীভাবে ই-টিআইএন নেবেন

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ওয়েবসাইট ই-টিআইএন নেওয়া যায়। 

প্রথমে আপনাকে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে প্রাথমিক নিবন্ধন নিতে হবে। সেখানে গিয়ে রেজিস্ট্রার অপশনে ক্লিক করুন। এখানে আপনার ইউজার আইডি (কমপক্ষে ৮ অক্ষরে) এবং পাসওয়ার্ড (কমপক্ষে ৮ অক্ষরের) চাইবে। এরপর আবার পাসওয়ার্ড পুনরায় লিখতে হবে। নিরাপত্তাজনিত একটি প্রশ্নের উত্তরও দিতে হবে। আপনার দেশ, মুঠোফোন নম্বর, ই-মেইল এবং ভেরিফিকেশন লেটার করতে হবে। এরপর নিচের রেজিস্ট্রারে ক্লিক করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার মোবাইলে একটা অ্যাকটিভিশন কোড আসবে। অনলাইনে তা লিখে লগইন করতে হবে। 

এরপরে আসবে টিআইএনের মূল ফরম। সেই ফরমটি ধাপে ধাপে পূরণ করতে হবে। ই-টিআইএনের ফরমে নাম, ঠিকানা, পিতা-মাতার নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, মুঠোফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা, পেশাসহ যাবতীয় তথ্য দিতে হবে। ফরম পূরণের ধাপগুলো শেষ করে সাবমিট বা জমা দিলে কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার ই-মেইলে কিউআর কোডসহ টিআইএন সনদের পিডিএফ অনুলিপি চলে আসবে। তবে এনবিআর সার্ভার স্বয়ংক্রিয়ভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাইবাছাই করে ফেলবে। মনে রাখতে হবে, ই-টিআইএন এখন ১২ সংখ্যার। তবে যেকোনো সহায়তার জন্য ৩৩৩ নম্বরে ফোন করতে হবে। 

কাদের টিআইএন লাগবে

কিছু কাজ করতে গেলে আপনাকে টিআইএন নিতেই হবে। যেমন শহর এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে টিআইএন লাগবে। এ ছাড়া ১৬ হাজার টাকার ওপরে মাসিক বেতন হলেই টিআইএন নিতে হবে। কারণ রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করাতেও টিআইএন লাগবে। 

কিছু ব্যবসা করতেও টিআইএন লাগবে। যেমন মুঠোফোন রিচার্জ ব্যবসা, মোবাইল ব্যাংকিং, পরিবেশক এজেন্সি, বিভিন্ন ধরনের পরামর্শক, ক্যাটারিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, জনবল সরবরাহ ও সিকিউরিটি সার্ভিস। এমনকি আমদানি-রপ্তানির বিল অব এন্ট্রি জমা দিতে হলেও টিআইএন লাগবে। 

এ ছাড়া রপ্তানি নিবন্ধন সনদ নেওয়া, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া বা পুনর্নিবন্ধন; দরপত্র জমা; অভিজাত ক্লাবের সদস্যপদ গ্রহণ; জমি, ভবন ও ফ্ল্যাট নিবন্ধন; মোটরসাইকেল-বাস-ট্রাকের মালিকানা পরিবর্তন ও ফিটনেস নবায়ন; চিকিৎসক, প্রকৌশলী, হিসাববিদসহ বিভিন্ন ধরনের পেশাজীবী সংগঠনের সদস্য, বাণিজ্য সংগঠনের সদস্য, কোম্পানির পরিচালক ও স্পনসর শেয়ারহোল্ডার; বিবাহ নিবন্ধনকারী বা কাজি; ড্রাগ লাইসেন্স নিতে টিআইএন প্রয়োজন। 

আবার টিআইএন ছাড়া জাতীয় সংসদ, সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া যাবে না। এ ছাড়া ভবনের নকশা অনুমোদন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণ নিলে, ক্রেডিট কার্ড থাকলে টিআইএন থাকতে হবে।