আইপিও আবেদন জমা: ৩৮৮ কোটি টাকা তুলতে চায় রবি

টাকা। প্রতীকী ছবি
টাকা। প্রতীকী ছবি

প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে প্রায় ৩৮৮ কোটি টাকা তুলতে চায় রবি আজিয়াটা। ১০ টাকা অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালুতে কোম্পানিটি আইপিওতে শেয়ার ছাড়বে। শেয়ার ছাড়ার অনুমোদনের জন্য গতকাল সোমবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আবেদন জমা দিয়েছে। বিএসইসি–সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, রবি আজিয়াটা প্রাক্‌–আইপিও এবং আইপিও মিলিয়ে মোট ১০ শতাংশ শেয়ার বাজারে ছাড়তে আগ্রহী। যার মাধ্যমে কোম্পানিটি মোট ৫২৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। এর মধ্যে ২ শতাংশ শেয়ার কোম্পানিটির কর্মীদের কাছে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে বিক্রি করে রবি আজিয়াটা এরই মধ্যে ১৩৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। বাকি ৮ শতাংশ শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে বাজারে ছাড়া হবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের পর। সব মিলিয়ে আইপিওর মাধ্যমে রবি আজিয়াটা প্রায় ৫২ কোটি ৪০ লাখ শেয়ার ইস্যু করবে। গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত আর্থিক বছরের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই আইপিও আবেদন জমা দিয়েছে।

বিএসইসিসহ একাধিক সূত্রে রবির আইপিও আবেদন জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেলেও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সূত্রে খবর নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কোম্পানিটি শেয়ার বিক্রির টাকার বড় অংশ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে ব্যয় করবে বলে আবেদনে জানিয়েছে। 

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, আইপিওতে শেয়ারবাজারে আসার পর কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৫ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। তাতে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের হিসাবে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৫২৪ কোটিতে।

>

বিএসইসিতে আইপিও আবেদন জমা দিয়েছে রবি আজিয়াটা
১০ টাকা অভিহিত মূল্যে শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব

বাংলাদেশে রবি আজিয়াটা নামে কার্যক্রম পরিচালনায় যুক্ত এই কোম্পানির প্রায় ৬৯ শতাংশ মালিকানা রয়েছে মালয়েশিয়ার আজিয়াটা বারহাদের হাতে। বাকি মালিকানার মধ্যে ২৫ শতাংশ রয়েছে ভারতী এয়ারটেল ইন্টারন্যাশনাল (সিঙ্গাপুর) ও প্রায় ৬ শতাংশ জাপানের এনটিটি ডকোমো ইনকরপোরেশনের হাতে। এখন আইপিওর অনুমোদন পেলে এটির শেয়ারের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত হবে বাংলাদেশিরাও।

এদিকে বর্তমান কমিশনের সময়কালে রবিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শেয়ারবাজারে আসার অনুমোদন দিতে চায় বিএসইসি। এ জন্য দ্রুততম সময়ে কোম্পানিটির আইপিওর আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। সরকারও কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে আনার বিষয়ে আন্তরিক।

বর্তমানে টেলিকম খাতের একমাত্র কোম্পানি হিসেবে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে গ্রামীণফোন। ২০০৯ সালে কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। বর্তমানে গ্রামীণফোনই বাংলাদেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর। আর দ্বিতীয় শীর্ষ অপারেটর রবি আজিয়াটা। রবি শেয়ারবাজারে এলে তাতে দেশের শীর্ষ দুই বহুজাতিক মোবাইল অপারেটরই বাজারে তালিকাভুক্ত হবে।  

গত ২২ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছিলেন, কোম্পানিটির মালয়েশিয়াভিত্তিক মূল পরিচালনা পর্ষদ শেয়ার ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরুর অনুমতি দিয়েছে। তবে শেয়ারবাজারে আসার জন্য সরকারের কাছে দুটি দাবি জানিয়েছে রবি। তার একটি হচ্ছে ন্যূনতম করহার ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগের মতো দশমিক ৭৫ শতাংশে নামিয়ে আনা। অন্যটি করপোরেট করহার ৪৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশে নিয়ে আসা।