স্মার্টফোনের অর্থনীতি

গত এক দশকে সবচেয়ে দ্রুত বেড়েছে, এমন একটি খাত হচ্ছে স্মার্টফোন শিল্প। কয়েক শ কোটি ডলারের এই ব্যবসা এখনো বাড়ছে। এরই মধ্যে আইফোন প্রস্তুতকারী কোম্পানি অ্যাপল ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। স্যামসাং তো আছেই, চীনে হুয়াওয়ে এবং শাওমিও বিশ্ববাজারে স্থান করে নিচ্ছে।

কেবল যে স্মার্টফোন বিক্রি করেই কোম্পানিগুলো ব্যবসা সীমিত রেখেছে, তা নয়। স্মার্টফোনকে কেন্দ্র করেও বিশাল সব ব্যবসাও গড়ে উঠেছে। লন্ডনভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডেলোইট বলছে, ২০২০ সালে স্মার্টফোনকে কেন্দ্র করে যে অর্থনীতি, তার পরিমাণ দাঁড়াবে ৯৪৪ বিলিয়ন ডলার। এই অর্থ হচ্ছে ৯৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার (১০০ কোটিতে ১ বিলিয়ন)। এর মধ্যে কেবল স্মার্টফোনের বিক্রিই হবে ৪৮৪ বিলিয়ন ডলার।

তীব্র প্রতিযোগিতার এই বাজারে স্মার্টফোন আছে নানা ধরনের। ফলে স্মার্টফোনের বিজ্ঞাপন বাজারটিও জমজমাট। চলতি বছরে এর পরিমাণ হবে ১৭৬ বিলিয়ন ডলার। স্মার্টফোন ব্যবহার মানেই নানা ধরনের অ্যাপস লাগবেই। এই অ্যাপসের বাজারটিও যথেষ্ট বড়—১১৮ কোটি ডলারের। আরও আছে নানা ধরনের এক্সেসরিজ বা আনুষঙ্গিক পণ্য। চলতি বছরে এর বাজার দাঁড়াবে ৭৭ বিলিয়ন ডলারের। স্মার্টফোনের সৌন্দর্য বাড়াতে নানা ধরনের কাভার থাকে। ওয়্যারেবল বা পরিধেয়র বাজার ২৫ বিলিয়ন ডলারের। এ ছাড়া আছে বিমা, মেরামত, গান, স্পিকার, ভিডিও স্ট্রিমিং, সংরক্ষণ বা স্টোরেজের মতো সেবার বাজার।

কার কত বড় বাজার

মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো প্রতিবছর তাকিয়ে থাকে মোবাইল কংগ্রেসের দিকে। করোনাভাইরাসের কারণে বার্সেলোনায় এবারের কংগ্রেস হলো না। এই কংগ্রেসেই বড় কোম্পানিগুলো নতুন নতুন পণ্য নিয়ে হাজির হয়। যেমন কথা ছিল স্যামসাং তাদের ফ্ল্যাগশিপ ফোন গ্যালাক্সি এস২০ মডেলের ঘোষণা দেবে। কারণ, এর ওপরই নির্ভর করছে কোম্পানিটি বাজার দখলে কতটা এগিয়ে যেতে পারবে।

এখন পর্যন্ত বাজারের সবচেয়ে বড় হিস্যা স্যামসাংয়েরই। তবে এগিয়ে যাচ্ছে চীনের হুয়াওয়ে। এমনকি তারা অ্যাপলকেও ছাড়িয়ে গেছে। শীর্ষ পাঁচে আছে চীনের আরও দুটি কোম্পানি। যেমন শাওমি ও অপো। এবার দেখা যাক, ২০১৯ সালে কোন কোম্পানি কত মোবাইল সেট বিক্রির জন্য বাজারে পাঠিয়েছে। যেমন স্যামসাং পাঠিয়েছে ২৯ কোটি ৬০ লাখ মোবাইল সেট, হুয়াওয়ে ২৪ কোটি ১০ লাখ, অ্যাপল ১৯ কোটি ১০ লাখ, শাওমি ১২ কোটি ৬০ লাখ এবং অপো ১১ কোটি ৪০ লাখ সেট। সব মিলিয়ে ২০১৯ সালে মোট স্মার্টফোন বিক্রির জন্য বাজারে ছাড়ার পরিমাণ ছিল ১৩৭ কোটি ১০ লাখ, যা আগের বছরে ছিল ১৪০ কোটি ৩০ লাখ সেট।