রপ্তানি পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দিলেন ডিপো মালিকেরা

প্রথম আলো ফাইল ছবি।
প্রথম আলো ফাইল ছবি।

তিনটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কনটেইনারে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে ডিপো পরিচালনাকারীরা। আজ বুধবার সকাল থেকে চট্টগ্রামের ১৮টি কনটেইনার ডিপোতে এই তিন প্রতিষ্ঠানের কনটেইনারে কোনো রপ্তানি পণ্য বোঝাই করা হচ্ছে না। বাড়তি মাশুল আদায়ের দাবিতে কোনো ঘোষণা ছাড়াই এই কার্যক্রম শুরু করেন ডিপোর মালিকেরা।

বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের আনুমানিক ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ এই তিন প্রতিষ্ঠানের কনটেইনারে করে বিদেশি ক্রেতাদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়। প্রথমে রপ্তানিমুখি কারখানা থেকে চট্টগ্রামের ১৮টি ডিপোতে রপ্তানি পণ্য এনে কনটেইনারে ভরা হয়। এরপর ডিপোর গাড়িতে করে বন্দর নিয়ে জাহাজে তুলে দেওয়া হয়। এই কর্মসূচির কারণে সিংহভাগ রপ্তানি পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেল।

জাহাজ কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, যে তিনটি কোম্পানির কনটেইনারে রপ্তানি পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে, সেগুলো হলো ডেনমার্কভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিপিং লাইন মায়ের্সক, হংকংভিত্তিক গোল্ড স্টার লাইন এবং ওরিয়েন্ট ওভারসিজ কনটেইনার লাইন। এসব কনটেইনারে রপ্তানি হবে—এমন পণ্য আজ বুধবার সকাল থেকে কোনো ডিপোতেই ঢোকানো হচ্ছে না। ফলে, এসব রপ্তানি পণ্যবাহী গাড়ি ডিপোর সামনে আটকে আছে।

জানতে চাইলে গোল্ড স্টার লাইনের স্থানীয় প্রতিনিধি ট্রাইডেন্ট শিপিং লাইনের জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনটি প্রতিষ্ঠানের কোনো কনটেইনারে রপ্তানি পণ্য বোঝাই করছে না ডিপোগুলো। হঠাৎ করে এই কর্মসূচির কারণে ডিপোগুলোর সামনে বিপুল পরিমাণ রপ্তানি পণ্য আটকা পড়তে শুরু করেছে।

ডিপোতে রপ্তানি পণ্য পাঠিয়ে তা বিদেশি ক্রেতাদের পণ্য পরিবহনের প্রতিনিধি ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারদের হাতে তুলে দেন রপ্তানিকারকেরা। ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) পরিচালক খায়রুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সেবা মাশুল বাড়ানো নিয়ে আলোচনা চলছে। খুব দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে সব ব্যবহারকারীকে জানানো হয়েছে। আলোচনা চলা অবস্থায় হঠাৎ করে এই কর্মসূচি রপ্তানি খাতে নতুন করে সংকট তৈরি করবে। তিনি জানান, বাফার সভাপতি কবির আহমেদ বিষয়টি নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সমাধানে পৌঁছতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। খুব দ্রুত সমাধান না হলে সংকট তৈরি হবে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে কনটেইনার ডিপো মালিক সমিতি বা বিকডার সভাপতি নুরূল কাইয়ূম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। সংগঠনের সহসভাপতিও ফোন ধরেননি।

বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি এম এ সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ডিপোর মালিকদের মতো ব্যবসায়ী সংগঠন কীভাবে মাশুল আদায়ের জন্য রপ্তানি পণ্য পরিবহন বন্ধ করতে পারে? কিছুদিন আগে গাড়িশ্রমিকদের জন্য একবার রপ্তানি পণ্য পরিবহন কয়েক দিন বন্ধ ছিল। এখন করোনভাইরাস নিয়ে সংকট চলছে। এ অবস্থায় এ ধরনের কর্মসূচি রপ্তানি খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।