সরকার, বিশেষজ্ঞ - কেউই ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস করে না: রুবানা হক

রুবানা হক
রুবানা হক

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি রুবানা হক বলেছেন, ‘নীতিনির্ধারক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি আছে। এটা খুবই বেদনাদায়ক। সরকার আমাদের বিশ্বাস করে না। বিশেষজ্ঞরাও বিশ্বাস করে না।’

আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের (এমসিসিআই) কার্যালয়ে এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন রুবানা হক। এমসিসিআই ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ জার্নি টু মিডল ইনকাম স্ট্যাটাস রোল অব দ্য প্রাইভেট সেক্টর’ শীর্ষক প্রবন্ধ তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ আলী জাফর ও বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর ঢাকা কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ এবং বাণিজ্য ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বিভাগের প্রধান মাশরুর রিয়াজ। সভাপতিত্ব করেন এমসিসিআই সভাপতি নিহাত কবির।

একই অনুষ্ঠানে এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘কর কাঠামোয় সংস্কার করা প্রয়োজন। বাজেটের আগে যারা লবিং করবে, তারা ছাড় পাবে এটা কোনো সমাধান হতে পারে না। দয়া করে বেসরকারি খাতকে বিশ্বাস করুন। আমরা অবশ্যই মুনাফা করি, শ্রমিকদের বেতন দিই। দেশের জন্যও আমরা অবদান রাখি।’

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর (এফ) রহমান। তাঁকে উদ্দেশ করে নাসিম মঞ্জুর বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নীতিনির্ধারকদের বিশ্বাসের সম্পর্ক নেই। কোনো স্বীকৃতি মিলছে না।

এ নিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘এনবিআর বন্ড সুবিধা দিয়েছে। এটা অপব্যবহার হচ্ছে, এমন অভিযোগ তোলা হয়। আপনারা বলতে পারেন, অপব্যবহার হচ্ছে, তবে তা রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এভাবে এ থেকে বের হওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ব্যাংকঋণের সুদ হার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হবে। এখনকার দিনে এটা আন্তর্জাতিক রীতির বাইরে। তবে সুদ নির্ধারণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। ১৪-১৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করা কঠিন।’

সালমান এফ রহমান বলেন, ব্যাংক খাতের আরেকটি সমস্যা হলো খেলাপি ঋণ। এ জন্য আলাদা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি হচ্ছে। এটা হলে খারাপ ঋণগুলো এই কোম্পানিতে চলে যাবে। ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন ভালো হয়ে যাবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কেন বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি হয়নি, এটার বড় প্রশ্ন। এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। একজন সরকারি আমলার বেসরকারি খাতের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির সুযোগ খুব কম। এটা আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। তবে আমি এটা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছি।’

আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন সাবেক হাইকমিশনার ফারুক সোবহান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি আলমাস কবির, এসিআই ফর্মুলেশন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুস্মিতা আনিস প্রমুখ।