করোনায় কুপোকাত এশিয়ার শেয়ারবাজার, রুপির রেকর্ড দরপতন

আজ লেনদেনের শুরুতে জাপানের বেঞ্চমার্ক নিকেই সূচক কমেছে সাড়ে ৮ শতাংশ। ছবি: এএফপি
আজ লেনদেনের শুরুতে জাপানের বেঞ্চমার্ক নিকেই সূচক কমেছে সাড়ে ৮ শতাংশ। ছবি: এএফপি

করোনাভাইরাস আতঙ্কে ধসে পড়েছে এশিয়ার পুঁজিবাজার। ভারত, চীন, জাপান, হংকং—সব শেয়ারবাজারেই সূচক কমেছে। আজ শুক্রবার লেনদেনের শুরুতেই ব্যাপক ধস নামে ভারতে সেনসেক্স সূচকে। নিফটি ৫০ সূচকটি ১০ শতাংশ কমে সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে ফেলে। লেনদেন হল্টেড হয়ে যায়। পড়ে প্রায় ৪৫ মিনিট লেনদেন বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়। তবে সূচক এ সময় বাড়তে দেখা যায়। এখন ৬ শতাংশ পতনে আছে সূচকটি।

২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার পর ভারতের শেয়ারবাজারে দরপতনের সার্কিট চালু হয়। প্রথমে ১০ শতাংশ পতন হলে লেনদেন হল্টেড হয়। আবার চালুর পর যদি ১৫ শতাংশ কমে, তবে সার্কিট ব্রেকার সীমা অতিক্রম করে লেনদেন হল্টেড হবে। এনটিভি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা বিশ্বব্যাপী করোনভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রভাব নিয়ে আতঙ্কিত। গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে সেনসেক্স সূচক প্রায় ৩ হাজার পয়েন্ট বা ৮ শতাংশের মতো কমে। এই সূচকের ইতিহাসে এক দিনে এত বড় পতন আর হয়নি।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ লেনদেনের একপর্যায়ে জাপানের বেঞ্চমার্ক নিকেই সূচক কমেছে সাড়ে ৮ শতাংশ। হংকংয়ের হ্যাংসেং কমেছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক কমেছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান সূচক হারিয়েছে ৮ শতাংশ দর।

গত বুধবার কোভিড-১৯ কে প্যানডেমিক, অর্থাৎ, অতি মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউইউচও)। জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল তাঁর দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সব ইউরোপিয়ান দেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দরজা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন। সব মিলিয়ে বিশ্বজুড়ে এক মহা আতঙ্ক দেখা দেয়। তার ওপরে তেলের দামও কমছে চড়চড় করে। রীতিমতো উদ্বেগে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে বৃহস্পতিবার থেকেই ধস শুরু হয় বিশ্বের বিভিন্ন শেয়ারবাজারে।

রুপির দর
করোনা-আতঙ্ক কেবল শেয়ারবাজারে নয়, মুদ্রাবাজারেও প্রভাব ফেলেছে। আজ মার্কিন ডলারের বিপরীতে রেকর্ড পরিমাণ কমেছে রুপির দর। এক ডলার সমান সাড়ে ৭৪ রুপি হয়েছে। ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর যা সর্বনিম্ন। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ঝুঁকির মনোভাব বৃদ্ধির উত্তাপ ছড়িয়েছে রুপির বাজারে। গতকাল এক ডলার সমান ৭৪ দশমিক ২১ রুপিতে লেনদেন শেষ হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজার
গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে ধস নামে। ১৯৮৭ সালের পর এমন ধস আর দেখেনি এই পুঁজিবাজার। ডাও জোনস সূচক কমে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ, নাসডাক সূচক কমে ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ কমে সাড়ে ৯ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে এয়ারলাইনস সংস্থাগুলো। বোয়িংয়ের শেয়ারের দর কমেছে ১৮ শতাংশ, আমেরিকান এয়ারলাইনস দর হারিয়েছে ১৭ শতাংশ, ইউনাইটেড এয়ারলাইনস হারিয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ এবং ডেলটা হারিয়েছে ২১ শতাংশ দর।